পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
চয়নিকা

কেন তুমি মূর্তি হয়ে এলে,
রহিলে না ধ্যান ধারণার।
সেই মায়া উপবন কোথা হোলো অদর্শন
কেন হায় ঝাঁপ দিতে শুখাল পাথার।

স্বপ্নরাজ্য ছিল ও হৃদয়,
প্রবেশিয়া দেখিনু সেখানে
এই দিবা, এই নিশা, এই ক্ষুধা, এই তৃষা,
প্রাণপাখি কাঁদে এই বাসনার টানে।

আমি চাই তোমারে যেমন
তুমি চাও তেমনি আমারে,
কৃতার্থ হইব আশে গেলাম তোমার পাশে
তুমি এসে বসে আছ আমার দুয়ারে।

সৌন্দর্য-সম্পদ মাঝে বসি’
কে জানিত কাঁদিছে বাসনা।
ভিক্ষা, ভিক্ষা, সব ঠাঁই তবে আর কোথা যাই
ভিথারিনী হোলো যদি কমল-আসনা।

তাই আর পারি না সঁপিতে
সমস্ত এ বাহির অন্তর।
এ জগতে তোমা ছাড়া ছিল না তোমার বাড়া,
তোমারে ছেড়েও আজ আছে চরাচর।

কখনো বা চাঁদের আলোতে,
কখনো বসন্ত-সমীরণে,
সেই ত্রিভুবনজয়ী অপার রহস্যময়ী
আনন্দ-মুরতিখানি জেগে ওঠে মনে।