পাতা:চয়নিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
চয়নিকা

প্রতি রজনীর আর প্রতি দিবসের
তপ্ত প্রেম-তৃষা?
এ গীত-উৎসব মাঝে
শুধু তিনি আর ভক্ত নির্জনে বিরাজে;
দাঁড়ায়ে বাহির দ্বারে মোরা নরনারী
উৎসুক শ্রবণ পাতি’ শুনি যদি তারি
দুয়েকটি তান,—দূর হতে তাই শুনে’
তরুণ বসন্তে যদি নবীন ফাল্গুনে
অন্তর পুলকি’ উঠে; শুনি’ সেই সুর
সহসা দেখিতে পাই দ্বিগুণ মধুর
আমাদের ধরা;—মধুময় হয়ে উঠে
আমাদের বনচ্ছায়ে যে-নদীটি ছুটে,
মোদের কুটীর প্রান্তে যে-কদম্ব ফুটে,
বরষার দিনে;—সেই প্রেমাতুর তানে
যদি ফিরে চেয়ে দেখি মোর পার্শ্বপানে
ধরি’ মোর বামবাহু রয়েছে দাঁড়ায়ে
ধরার সঙ্গিনী মোর, হৃদয় বাড়ায়ে
মোর দিকে, বহি’ নিজ মৌন ভালোবাসা;
ওই গানে যদি বা সে পায় নিজ ভাষা,—
যদি তার মুখে ফুটে পূর্ণ প্রেম-জ্যোতি,
তোমার কি তাঁর, বন্ধু, তাহে কার ক্ষতি।

সত্য ক’রে কহ মোরে হে বৈষ্ণব কবি,
কোথা তুমি পেয়েছিলে এই প্রেমচ্ছবি,
কোথা তুমি শিখেছিলে এই প্রেমগান
বিরহ-তাপিত। হেরি কাহার নয়ান
রাধিকার অশ্রু আঁখি পড়েছিল মনে।
বিজন বসন্তরাতে মিলন-শয়নে