পাতা:চরিত্রহীন - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
চরিত্রহীন
১৭০

কিরণময়ী মা হাসিল, হাসিমুখে বলল, তুমি ঠাকুরপাে বন্ড ধশের কাঙাল। এত যশ নিয়ে রাখবে কোথায় বল ত? সহসা এপ মন্তব্যের হেতু বুঝিতে না পারিয়া উপেন্দ্র কিছু বিস্মিত হইল। কিরণময়ী কহিল, তা বৈ কি ঠাকুরপাে। তোমার পরোপকারের যশ এমন 'নিঃস্বার্থ, এমন নিলিপ্ত হওয়া চাই, যেন বগে মতে কোথাও তার জোড়া না থা। আমাদের জন্যে তুমি যা করেছ ঠাকুরপাে, তাতে আমি বুক চিরে পা ধুইয়ে “দিতে গেলেও ত তােমার আপত্তি করা সাজে না। আর এই দুটো খাবার তৈরী করে দেওয়ার কথাতেই ঘাড় নাড়চ? ছি ছি, কি আমাদের ভাবে বল ত? মনিষ নই অষিরা? না, মানুষের রক্ত আমাদের দেহে হয় না। উপেন্দ্র অত্যন্ত লতি ও কণ্ঠিত হইয়া বলিল, এ-সব কোন কথা ভেবেই আমি আপত্তি করতে যাইনি বোঠান। আমি শুধ শুধ; কি ঠাকুরপাে? তবে বুঝি ঘরে ফেরবার তাড়ায় কি বছি না বলছি হংশ ছিল না? উপেন্দ্র বাঁচিয়া গেল। পরিহাস আবার সহজপথে ফিরিয়া আমায় সে খুশী হইয়া সহাস্যে কহিল, ও বদনামটা আমার আছে বটে বৌঠান, সে আমি অস্বীকার করতে পারিনি। কিন্তু এখন সেজন্য নয়। যথাথই আমি ভেবেছিলাম, আজ অাপনি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। হলমই বা বলিয়া কিরণময়ী পুনরায় একটু হাসিল। তারপরে সহসা গম্ভীর হইয়া কহিল, হায় রে । আজ যদি আমার সতীশ-ঠাকুরপাে থাকতেন। তা হলে নিজের কথা আর নিজের মুখে বলতে হতো না। তিনি সহস্র বন হয়ে বক্তৃতা শুর করে দিতেন। না ঠাকুরপো, আমার নিজের ত ও-সব প্রাখিক্লখির শখ করবার অবস্থাই নয়, তা ছাড়া বাঙালীর ঘরের কোন মেয়ের পক্ষেই ও বদনামটা বোধ করি খাটে না। অত্মীয়ই হোক আর অনাত্মীয়ই হোক, পরষমানুষের খাওয়া হয়নি শুনলে বা সীর মেয়ে মরতে বসলেও একবার উঠে দাঁড়ায়। তা জানো ? উপেন্দ, এবার হাসিয়া কহিল, জানি বৈ কি কোঠান, বেশ জানি। ীকার করছি অপরাধ হয়েছে-অর না। খিদেও পেয়েছে, চলন কি খেতে দেবেন। এসাে, বলিয়া কিরণময়ী পথ দেখাইয়া রান্না ঘরের অভিমুখে চলিল। শাশুড়ীর ঘরের সম্মুখে আসিয়া দেরি ঠেলিয়া উকি মারিয়া দেখিল, তিনি অকাঅরে মাইতেছেন। রান্নাঘরে আসিয়া সতীশকে যেমন পিড়ি পাত্মাি বসাইত তেমনি করিয়া উপেন্দকে বসাইল। কি উনুন জালিয়া দিয়া অন্যান্য আয়োজন করিতে বাহির হইয়া গেলে কিরণময়ী তাহার এই নত অতিথিটির প্রতি চাহিয়া কহিল, আহা ঠাকুরপাে, আমায় কষ্ট হবে বলে না খেয়ে চলে যাবার এই যে প্রস্তাবটি করেছিলে, সেটি যা