দ্বারা উপেক্ষিত হইরাও, আসন্ন সমাজ-বিপ্লবের মুখে, এই সকল ধর্ম্মনিষ্ঠ, কর্ম্মনিষ্ঠ, আত্মনিষ্ঠ, শান্ত ও সমাহিতচিত্ত সুধীজনই অতি সন্তর্পণে, সেই সঙ্কটকালে, সমাজের সনাতন প্রকৃতিটীকে প্রাণে পূরিয়া বাঁচাইয়া রাখেন।
গুরুদাস বাবু ও আধুনিক শিক্ষিত সম্প্রদায়
বাঙ্গলার স্বদেশী সমাজ একটা প্রবল বিপ্লবস্রোতের মাঝখানে আসিয়া পড়িয়াছে। আর এই সঙ্কটকালে যে অত্যল্পসংখ্যক ধীর—প্রকৃতি সুধীজনকে আশ্রয় করিয়া আমাদের সমাজের সনাতন প্রাণবস্তু আপনাকে বাঁচাইয়া রাখিবার চেষ্টা করিতেছে, গুরুদাস বাবু তাঁহাদের মধ্যে সর্ব্বপ্রধান। যে বিদেশীয় শিক্ষা ও সাধনার প্রভাবে এই যুগান্তর উপস্থিত হইয়াছে, গুরুদাস বাবু সেই শিক্ষা ও সাধনাকে সুন্দররূপেই অধিগত করিয়াছেন। এ দেশের আধুনিক শিক্ষাপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ের তিনি অগ্রণী। যে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এই বিদেশীয় শিক্ষা ও সাধনার সেতু-স্বরূপ হইয়া আছে, গুরুদাস বাবু তাহার অন্যতম অধিনায়ক। কিন্তু গুরুদাস বাবুর সমসাময়িক ইংরেজি-শিক্ষা-প্রাপ্ত সম্প্রদায়ের অনেকেই যেরূপভাবে এই শিক্ষাদীক্ষারদ্বারা একান্ত অভিভূত হইয়া পড়িয়াছিলেন, গুরুদাস বাবু কখনো সেরূপ হন নাই। অন্যদিকে যাঁহারা এই শিক্ষাদীক্ষা পাইয়াও, ইহার প্রতি একটা গভীর ও অযৌক্তিক বিরাগ বশতঃ এই শিক্ষাদীক্ষাতে দেশ মধ্যে যে অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তনের স্রোত আনিয়াছে, সর্ব্বতোভাবে তাহার প্রতিরোধ করিতে বদ্ধপরিকর হন; গুরুদাস বাবু কখনো একান্তভাবে তাঁহাদেরও সঙ্গে মিশিয়া যান নাই। মানুষের বিদ্যা তাহার ভৃত্য হইয়াই থাকিবে, তাহারই ঈঙ্গিতসাধনে সর্ব্বদা নিযুক্ত হইবে; ইহাই বিদ্যালাভের সত্যলক্ষ্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে আমরা