পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১০৪

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৬
চাঁদের পাহাড়

ঘর, ছায়াভরা শান্ত গ্রাম্য পথ, ক্ষুদ্র নদী, পরিচিত পাখীদের কাকলী - সে সব যেন কতদূরের কোন্ অবাস্তব স্বপ্ন-রাজ্যের জিনিস, আফ্রিকার কোনো হীরকখনি তাদের চেয়ে মূল্যবান নয়।

 কিন্তু তার এ ভাব কেটে গেল অনেক রাত্রে, যখন নির্ম্মেঘ আকাশে চাঁদ উঠল। সে অপার্থিব জ্যোৎস্নাময়ী রজনীর বর্ণনা নেই। শঙ্কর আর পৃথিবীতে নেই, বাংলা বলে কোনো দেশ নেই। সব স্বপ্ন হয়ে গিয়েচে - সে আর কোথাও ফিরতে চায় না, হীরা চায় না, অর্থ চায় না - পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বহু ঊর্দ্ধে এক কৌমুদী-শুভ্র দেবলোকের এখন সে অধিবাসী, তার চারিধারে যে সৌন্দর্য্য, কোনো মানুষের চোখ এর আগে তা কখনো দেখেনি। সে গহন নিস্তব্ধতা, এর আগে তা কোনো মানুষ অনুভব করেনি। জনমানবহীন বিশাল রিখটারসভেল্ড পর্ব্বত ও অরণ্য এই গভীর নিশীথে মেঘলোকে আসন পেতে আপনাতে আপনি আত্মস্থ, ধ্যানস্তিমিত - পৃথিবীর মানুষের সেখানে প্রবেশ লাভের সৌভাগ্য ক্কচিৎ ঘটে।

 সেই রাত্রে ঘুম থেকে ও ধড়মড়িয়ে উঠল আলভারেজের ডাকে। আলভারেজ ডাকচে - শঙ্কর, শঙ্কর, ওঠো বন্দুক বাগাও -

 —কি-কি-

 তারপর ও কাণ পেতে শুনলে - তাঁবুর চারিপাশে কে যেন ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্চে, তার জোরে নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা যাচ্চে তাঁবুর মধ্যে থেকে। চাঁদ ঢলে পড়েচে, তাঁবুর বাইরে