পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১০৫

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের পাহাড়
৯৭

অন্ধকারই বেশী, জ্যোৎস্নাটুকু গাছের মগডালে উঠে গিয়েচে, কিছুই দেখা যাচ্চে না। তাঁবুর দরজার মুখে আগুন তখনও একটু একটু জ্বলচে - কিন্তু তার আলোর বৃত্ত যেমন ছোট, আলোর জ্যোতিও ততোধিক ক্ষীণ, তাতে দেখবার সাহায্য কিছুই হয় না।

 হুড়মুড় করে একটা শব্দ হোল - গাছপালা ভেঙে একটা ভারী জানোয়ার হঠাৎ ছুটে পালালো যেন। যেন তাঁবুর সকলে সজাগ হয়ে উঠেচে, এখন আর অতর্কিত শিকারের সুবিধে হবে না, বাইরের জানোয়ারটা তা বুঝতে পেরেচে।

 জানোয়ারটা যাই হোক না কেন, তার যেন বুদ্ধি আছে, বিচারের ক্ষমতা আছে, মস্তিষ্ক আছে।

 আলভারেজ রাইফেল হাতে টর্চ্চ জ্বেলে বাইরে গেল। শঙ্করও গেল ওর পেছনে পেছনে। টর্চ্চের আলোয় দেখা গেল, তাঁবুর উত্তর-পূর্ব্ব কোণের জঙ্গলের চারা গাছপালার ওপর দিয়ে যেন একটা ভারী ষ্টীম রোলার চলে গিয়েচে। আলভারেজ সেইদিকে বন্দুকের নল উঁচিয়ে বার দুই দেওড় করলো।

 কোনো দিকে কোনো শব্দ পাওয়া গেল না।

 তাঁবুতে ফিরবার সময় তাঁবুর ঠিক দরজার মুখে আগুনের কুণ্ডের অতি নিকটেই একটা পায়ের দাগ দু'জনেরই চোখে পড়ল। তিনটা মাত্র আঙ্গুলের দাগ ভিজে মাটীর ওপর সুস্পষ্ট।

 এতে প্রমাণ হয়, জানোয়ারটা আগুনকে ডরায় না।