পাতা:চাঁদের পাহাড়.djvu/১২৯

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
চাঁদের পাহাড়
১২১

মধ্যে হঠাৎ আবার দু’বার পিস্তলের আওয়াজ এবং সেই সঙ্গে একটা অস্পষ্ট চিত্‍কার শুনতে পাওয়া গেল।

 শঙ্কর পিস্তলের আওয়াজ লক্ষ্য করে ছুটে গেল। কিছুদূরে গিয়েই দেখলে বনের মধ্যে একটা বড় গাছের তলায় আলভারেজ শুয়ে। টর্চ্চের আলোয় তাকে দেখে শঙ্কর শিউরে উঠল ভয়ে বিস্ময়ে— তার সর্ব্বশরীর রক্তমাখা, মাথাটা বাকী শরীরের সঙ্গে একটা অস্বাভাবিক কোণের সৃষ্টি করেচে। গায়ের কোটটা ছিন্নভিন্ন।

 শঙ্কর তাড়াতাড়ি ওর পাশে গিয়ে বসে ওর মাথাটা নিজের কোলে তুলে নিলে। ডাকলে— আলভারেজ! আলভারেজ!

 আলভারেজের সাড়া নেই। তার ঠোঁট দুটো একবার যেন নড়ে উঠল, কি যেন বলতে গেল। সে শঙ্করের দিকে চেয়েই আছে, অথচ সে চোখে যেন দৃষ্টি নেই; অথবা কেমন যেন নিস্পৃহ, উদাস দৃষ্টি।

 শঙ্কর ওকে বহন করে তাঁবুতে নিয়ে এল। মুখে জল দিল, তারপর গায়ের কোটটা খুলতে গিয়ে দেখে, গলার নিচে কাঁধের দিকের খানিকটা জায়গার মাংস কে যেন ছিঁড়ে নিয়েচে! সারা পিঠটারও সেই অবস্থা। কোন এক অসাধারণ বলশালী জন্তু, তীক্ষ্ণধার নখে বা দন্তে পিঠখানা চিরে ফালা ফালা করেচে।

 পাশেই নরম মাটীতে কোনো এক জন্তুর পায়ের দাগ—

 তিনটা মাত্র আঙুল সে পায়ে।

 সারারাত্রি সেই ভাবেই কাটল, আলভারেজের সাড়া