পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচরিত 4* হঠাৎ দুই একজন মানুষ গড়িয়া বসেন কেন, তাহ বলা কঠিন। কী নিয়মে বড়োলোকের অভু্যখান হয়, তাহা সকল দেশেই রহস্তময়— আমাদের এই ক্ষুদ্ৰকৰ্ম্ম ভীরত্বদয়ের দেশে সে রহস্ত দ্বিগুণতর দুর্তেপ্ত । বিদ্যাসাগরের চরিত্রস্থষ্টিও রহস্তাবৃত—কিন্তু ইহা দেখা যায়, সে চরিত্রের ছাঁচ ছিল ভালো। ঈশ্বরচন্দ্রের পূর্বপুরুষের মধ্যে মহন্থের উপকরণ প্রচুরপরিমাণে সঞ্চিত ছিল। বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করিলে প্রথমেই র্তাহার পিতামহ রামজয় তর্কভূষণ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। লোকটি অনন্তসাধারণ ছিলেন, তাহাতে সন্দেহমাত্র নাই । মেদিনীপুর জেলায় বনমালীপুরে তাহার পৈতৃক বাসভবন ছিল । র্তাহার পিতার মৃত্যুর পরে বিষয়বিভাগ লইয়া সহোদরদের সহিত মনাস্তর হওয়ায় তিনি সংসার ত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছিলেন। বহুকাল পরে তর্কভূষণ দেশে ফিরিয়া আসিয়া দেখিলেন, তাহার স্ত্রী দুর্গাদেবী ভাগুর ও দেবরগণের অনাদরে প্রথমে শ্বশুরালয় হইতে বীরসিংহগ্রামে পিত্রালয়ে, পরে সেখানেও ভ্রাত ও ভ্রাতৃজায়ার লাঞ্ছনায় বৃদ্ধপিতার সাহায্যে পিতৃভবনের অনতিদূরে এক কুটীরে বাস করিয়া চরকা কাটিয়া দুই পুত্র ও চারি কন্যা সহ বহুকষ্টে দিনপাত করিতেছেন। তর্কভূষণ ভ্রাতাদের আচরণ শুনিয়া নিজের স্বত্ব ও র্তাহীদের সংস্রব ত্যাগ করিয়া ভিন্নগ্রামে দারিদ্র্য অবলম্বন করিয়া রহিলেন । কিন্তু যাহার স্বভাবের মধ্যে মহত্ব আছে, দারিদ্র্যে র্তাহাকে দরিদ্র করিতে পারে না । বিদ্যাসাগর স্বয়ং তাহার পিতামহের যে চরিত্র বর্ণনা করিয়াছেন, স্থানে স্থানে তাহ উদ্ধত করিতে ইচ্ছা করি। “তিনি নিরতিশয় তেজস্বী ছিলেন ; কোন অংশে কাহারও নিকট অবনত হইয়া চলিতে, অথবা কোনোপ্রকারে অনাদর বা অবমাননা সহ