পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У о চারিত্রপূজা হইত। একদিন ক্ষুধার জালায় তাহার যথাসৰ্ব্বস্ব একখানি পিতলের থালা ও একটি ছোটো ঘটি কাসারির দোকানে বেচিতে গিয়াছিলেন। কাসারিরা তাহার পাচসিকা দর স্থির করিয়াছিল, কিন্তু কিনিতে সম্মত হইল না ; বলিল, অজানিত লোকের নিকট হইতে পুরানো বাসন কিনিয়া মাঝে মাঝে বড়ে ফেসাদে পডিতে হয়। * আর একদিন ক্ষুধার যন্ত্রণা ভুলিবার অভিপ্রায়ে মধ্যাহ্নে ঠাকুরদাস বাসা হইতে বাহির হইয়া পথে পথে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন । “বডবাজার হইতে ঠনঠনিয়া পৰ্য্যস্ত গিয়া এত অভিভূত হইলেন যে, আর র্তাহার চলিবার ক্ষমতা রহিল না । কিঞ্চিৎ পরেই তিনি এক দোকানের সম্মুখে উপস্থিত ও দণ্ডায়মান হইলেন ; দেখিলেন, এক মধ্যবয়স্ক বিধবা নারী ঐ দোকানে বসিয়া মুড়িমুড়কি বেচিতেছেন। তাহাকে দাড়াইয়া থাকিতে দেখিয়া, ঐ স্ত্রীলোক জিজ্ঞাসা করিলেন, বাপাঠাকুর দাডাক্টয়া আছ কেন ? ঠাকুরদাস তৃষ্ণার উল্লেখ করিয়া, পানার্থে জল প্রার্থন করিলেন । তিনি, সাদর ও সমেহবাক্যে, ঠাকুরদাসকে বসিতে বলিলেন, এবং ব্রাহ্মণের ছেলেকে শুধু জল দেওয়া অবিধেয়, এই বিবেচনা করিয়া, কিছু মুড়কি ও জল দিলেন। ঠাকুরদাস, যেরূপ ব্যগ্র হইয়া, মুড়কিগুলি খাইলেন, তাহ একদৃষ্টিতে নিরীক্ষণ করিয়া, ঐ স্ত্রীলোক জিজ্ঞাসা করিলেন, বাপাঠাকুর, আজ বুঝি তোমার খাওয়া হয় নাই ? তিনি বলিলেন, না মা, আজ আমি এখন পর্য্যন্ত কিছুই খাই নাই । তখন সেই স্ত্রীলোক ঠাকুরদাসকে বলিলেন, বাপাঠাকুর, জল থাইয়ে না, একটু অপেক্ষ কর । এই বলিয়া নিকটবৰ্ত্তী গোয়ালার দোকান হইতে, সত্বর দই কিনিয়া আনিলেন, এবং আরও মুড়কি দিয়া, ঠাকুরদাসকে পেট ভরিয়া ফলার করাইলেন ; পরে তাহার মুখে সবিশেষ সমস্ত অবগত সহোদর শ্ৰীশম্ভুচন্দ্র বিদ্যারত্ব প্রণীত বিদ্যাসাগরজীবনচরিত।