পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচরিত ২৯ স্বদেশের মর্য্যাদা নষ্ট করিয়া ইংরেজের অনুগ্রহ লাভ করেন। . কিন্তু বিদ্যাসাগর, সাহেবের হস্ত হইতে শিরোপা লইবার জন্তু কখনো মাথা নত করেন নাই ; তিনি আমাদের দেশের ইংরেজপ্রসাদগৰ্ব্বিত সাহেবামুজীবীদের মতো আত্মাবমাননার মূল্যে বিক্রীত সন্মান ক্রয় করিতে চেষ্টা করেন নাই। একটা উদাহরণে প্রমাণ হইবে,—একবার তিনি কাৰ্য্যোপলক্ষ্যে হিন্দুকলেজের প্রিন্সিপল কাবু-সাহেবের সঙ্গে দেখা করিতে গিয়াছিলেন। সভ্যতাভিমানী সাহেব তাহার বুট-বেষ্টিত দুষ্ট পা টেবিলের উপরে উর্দ্ধগামী করিয়া দিয়া বাঙালি ভদ্রলোকের সহিত ভদ্রতরক্ষা করা বাহুল্য বোধ করিয়াছিলেন । কিছু দিন পরে ঐ কার্সাহেব কাৰ্য্যবশত সংস্কৃতকলেজে বিদ্যাসাগরের সস্থিত দেখা করিতে আসিলে বিদ্যাসাগর চটিজুতাসমেত তাহার সর্বজনবন্দনীয় চরণযুগল টেবিলের উপর প্রসারিত করিয়া এই অহঙ্কত ইংরেজ অভ্যাগতের সহিত আলাপ করিলেন। বোধ করি গুনিয়া কেহ বিস্মিত হইবেন না, সাহেব নিজের এই অবিকল অনুকরণ দেখিয়া সন্তোষলাভ করেন নাই । ইতিমধ্যে কলেজের কার্য্যপ্রণালীসম্বন্ধে তাঁহার সহিত কর্তৃপক্ষের মতান্তর হওয়ায় ঈশ্বরচন্দ্ৰ কৰ্ম্মত্যাগ করিলেন । সম্পাদক রসময় দত্ত এবং শিক্ষাসমাজের অধ্যক্ষ ময়েট্‌সাহেব অনেক উপরোধ-অনুরোধ করিয়াও কিছুতেই তাহার পণ ভঙ্গ করিতে পারিলেন না। আত্মীয়-বান্ধবের র্তাহাকে জিজ্ঞাস করিল, তোমার চলিবে কী করিয়া ? তিনি বলিলেন, আলুপটল বেচিয়া, মুদির দোকান করিয়া দিন চালাইব। তখন বাসায় প্রায় কুড়িটি বালককে তিনি অন্নবস্ত্র দিয়া অধ্যয়ন করাষ্টতেছিলেন— তাহাদের কাহাকেও বিদায় করিলেন না। তাহার পিতা পূৰ্ব্বে চাকরি করিতেন—বিদ্যাসাগরের সবিশেষ অনুরোধে কাৰ্য্যত্যাগ করিয়া বাডি বসিয়া সংসারখরচের টাকা , পাইতেছিলেন। বিদ্যাসাগর কাজ ছাডিয়া