পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

‘8o চারিত্রপূজা হইতে রক্ষা করিয়া তাহাকে সগৌরবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিত সংযুক্ত করিয়া দিলেন—ইহাতে বিদ্যাসাগরের কেবল লোকহিতৈষী ও অধ্যবসায় নহে, তাহার সজাগ ও সহজ কৰ্ম্মবুদ্ধি প্রকাশ পায়। এই বুদ্ধিই যথার্থ পুরুষের বুদ্ধি,—এই বুদ্ধি স্থদুরসম্ভবপর কাল্পনিক বাধাবিঘ্ন ও ফলাফলের সূক্ষ্মাতিস্থল্ম বিচারজালের দ্বারা আপনাকে নিরুপায় অকৰ্ম্মণ্যতার মধ্যে জড়ীভূত করিয়া বসে না ; এই বুদ্ধি, কেবল স্বক্ষভাবে নহে, প্রত্যুত প্রশস্তভাবে, সমগ্রভাবে কৰ্ম্ম ও কৰ্ম্মক্ষেত্রের আদ্যোপাস্ত দেখিয়া লইয়া, দ্বিধা বিসর্জন দিয়া, মুহূর্তের মধ্যে উপস্থিত বাধার মৰ্ম্মস্থল আক্রমণ করিয়া, বীরের মতে কাজ করিয়া যায়। এই সবল কৰ্ম্মবুদ্ধি বাঙালির মধ্যে বিরল। যেমন কৰ্ম্মবুদ্ধি, তেমনি ধৰ্ম্মবুদ্ধির মধ্যেও একটা সবল কাগুজ্ঞান থাকিলে, তাহার দ্বারা যথার্থ কাজ পাওয়া যায়। কবি বলিয়াছেন— "ধৰ্ম্মস্ত সূক্ষ্মা গতি:”। ধৰ্ম্মের গতি সূক্ষ্ম হইতে পারে, কিন্তু ধৰ্ম্মের নীতি সরল ও প্রশস্ত। কারণ, তাহ বিশ্বসাধারণের ও নিত্যকালের । তাহ। পণ্ডিতের ও তাকিকের নহে। কিন্তু মনুষের দুর্ভাগ্যক্রমে মানুষ আপন সংস্রবের সকল জিনিষকেই অলক্ষিতভাবে কৃত্রিম ও জটিল করিয়া ভুলে। যাহা সরল, যাহা স্বাভাবিক, যাহা উন্মুক্ত-উদার, যাহা মূল্য দিয়া কিনিতে হয় না, বিধাতা যাহা আলোক বায়ুর স্তায় মনুষ্যসাধারণকে অযাচিত দান করিয়াছেন, মানুষ আপনি তাহাকে দুর্থ ল্য-দুৰ্গম করিয়া দেয়। সেইজন্ত সহজ কথা ও সরল ভাব প্রচারের জন্ত লোকোত্তর মহন্ধের অপেক্ষা করিতে হয়। বিদ্যাসাগর বালবিধবাবিবাহের ঔচিত্যসম্বন্ধে যে প্রস্তাব করিয়াছেন, তাহাও অত্যন্ত সহজ ; তাহার মধ্যে কোনো নূতনত্বের অসামান্ত নৈপুণ্য নাই। তিনি প্রত্যক্ষব্যাপারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করিয়া এক অমূলক কল্পনা