পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৪৫

বিদ্যাসাগরচরিত 8X, লোক স্বজন করিতে আপন শক্তির অপব্যয় করেন নাই। তিনি র্তাহার বিধবাবিবাহগ্রন্থে আমাদিগকে সম্বোধন করিয়া যে আক্ষেপোক্তি প্রকাশ করিয়াছেন, তাহ উদ্ধৃত করিলেই আমার কথাটি পরিষ্কার হইবে। “হা ভারতবর্ষীয় মানবগণ ••••••অভ্যাসদোষে তোমাদের বুদ্ধিবৃত্তি, ও ধৰ্ম্মপ্রবৃত্তিসকল এরূপ কলুষিত হইয়া গিয়াছে ও অভিভূত হইয়া, রহিয়াছে যে, হতভাগা বিধবাদিগের দুরবস্থাদর্শনে, তোমাদের চিরপ্তক হৃদয়ে কারুণ্যরসের সঞ্চার হওয়া কঠিন, এবং ব্যভিচারদোষের ও ভণহত্যাপাপের প্রবল স্রোতে দেশ উচ্ছলিত হইতে দেখিয়াও, মনে স্থণার উদয় হওয়া অসম্ভাবিত। তোমরা প্রাণভুল কস্তা প্রভৃতিকে অসহ বৈধব্যযন্ত্রণানলে দগ্ধ করিতে সন্মত আছ ; তাহারা দুনিবার রিপুবশীভূত হইয়া, ব্যভিচারদোষে দূষিত হইলে, তাহার পোষকতা করিতে সম্মত আছ ; ধৰ্ম্মলোপভয়ে জলাঞ্জলি দিয়া, কেবল লোকলজ্জাভয়ে, তাহাদের ভ্রাণহত্যার সহায়তা করিয়া স্বয়ং সপরিবারে পাপপঙ্কে কলঙ্কিত হইতে সন্মত আছ ; কিন্তু, কি আশ্চৰ্য্য ! শাস্ত্রের বিধি অবলম্বনপূর্বক পুনরায় বিবাহ দিয়া তাহাদিগকে দুঃসহ বৈধব্যযন্ত্রণা হইতে পরিত্রাণ করিতে, এবং আপনাদিগকেও সকল বিপদ হইতে মুক্ত করিতে, সম্মত, নহ। তোমরা মনে কর, পতিবিয়োগ হইলেই স্ত্রীজাতির শরীর পাষাণময় হইয়া যায় ; দুঃখ আর দুঃখ বলিয়া বোধ হয় না ; যন্ত্রণ আর. মন্ত্রণা বলিয়া বোধ হয় না; দুৰ্জয় রিপুবৰ্গ এককালে নিৰ্ম্মল হইয়া যায়। কিন্তু, তোমাদের এই সিদ্ধান্ত যে নিতান্ত ভ্রান্তিমূলক, পদে পদে তাহার উদাহরণ প্রাপ্ত হইতেছ। ভাবিয়া দেখ, এই অনবধানদোষে, সংসারতরুর কি বিষময় ফলভোগ করিতেছ।” রমণীর দেবীত্ব ও বালিকার ব্ৰহ্মচৰ্য্যমাহাঝ্যের সম্বন্ধে বিদ্যাসাগর, আকাশগামী ভাবুকতার ভূরিপরিমাণ সজল বাষ্প সৃষ্টি করিতে বসেন