পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচরিত 8& ৰাক্যরচনা করিতে পারি, তিল পরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না ; আমরা অহঙ্কার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতালাভের চেষ্টা করি না ; আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ক্রাট লইয়৷ আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি ;–পরের অনুকরণে আমাদের গৰ্ব্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সন্মান, পরের চক্ষে ধূলিনিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিক্স, এবং নিজের বাকচাতুৰ্য্যে নিজের প্রতি ভক্তি-বিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশু। এই দুৰ্ব্বল, ক্ষুদ্র, হৃদয়হীন, কৰ্ম্মহীন, দাম্ভিক, তাfককজাতির প্রতি বিদ্যাসাগরের এক সুগভীর ধিক্কার ছিল। কারণ, তিনি সৰ্ব্ববিষয়েই ইহাদের বিপরীত ছিলেন । বৃহৎ বনস্পতি যেমন ক্ষুদ্র বনজঙ্গলের পরিবেষ্টন হইতে ক্রমেই শূন্ত আকাশে মস্তক তুলিয় উঠে—বিদ্যাসাগর সেইরূপ বয়োবৃদ্ধিসহকারে বঙ্গসমাজের সমস্ত অস্বাস্থ্যকর ক্ষুদ্রতাজাল হইতে ক্রমশই শব্দহীন সুদূর নির্জনে উত্থান করিয়াছিলেন ; সেখান হইতে তিনি তাপিতকে ছায়৷ এবং ক্ষুধিতকে ফলদান করিতেন ; কিন্তু আমাদের শতসহস্ৰ ক্ষণজীবী সভাসমিতির ঝিল্লীঝঙ্কার হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ছিলেন। ক্ষুধিত-পীড়িত অনাথ-অসহায়দের জন্য আজ তিনি বর্তমান নাই,—কিন্তু র্তাহার মহৎ চরিত্রের যে অক্ষয়বট তিনি বঙ্গভূমিতে রোপণ করিয়া গিয়াছেন, তাহার তলদেশ সমস্ত বাঙালিজাতির তীর্থস্থান হইয়াছে । আমরা সেইখানে আসিয়া আমাদের তুচ্ছতা, ক্ষুদ্রতা, নিষ্ফল আড়ম্বর ভুলিয়া, স্বগ্নতম তর্কজাল এবং স্থলতম জড়ত্ব বিচ্ছিন্ন করিয়া, সরল, সবল, অটল মাহাত্ম্যের শিক্ষা লাভ করিয়া যাইব । আজ আমরা বিদ্যাসাগরকে কেবল বিষ্ঠা ও দয়ার আধার বলিয়া জানি, এই বৃহৎ পৃথিবীর সংস্রবে আসিয়া যতই আমরা মানুষ হইয়া উঠিব, ততই আমরা পুরুষের মতো দুর্গম-বিস্তীর্ণ কৰ্ম্মক্ষেত্রে অগ্রসর হইতে থাকিব, বিচিত্র শৌর্য্য-বীৰ্য্য-মহন্ধের সহিত যতই