পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচরিত ¢ዓ অচ্ছেদ্যভাবে পরস্পর জড়িত ছিল। যে কারণেই হোক, অভাগা জনসনকে নিয়তই রোগবিষ্টতা, শারীরিক ও আধ্যাত্মিক বেদন কোমরে বাধিয়া ফিরিতে হইত। তাহাকে একবার কল্পনা করিয়া দেখো, তাহার সেই রুগৃণশরীর, তাহার ক্ষুধিত প্রকাণ্ড হৃদয় এবং অনিৰ্ব্বচনীয় উদ্বাৰ্ত্তত চিন্তাপুঞ্জ লইয়। পৃথিবীতে বিপদাকীর্ণবিদেশীর মতো ফিরিতেছেন, ব্যগ্রভাবে গ্রাস করিতেছেন যে-কোনো পারমার্থিক পদার্থ তাহার সম্মুখে আসিয়া পড়ে, আর যদি কিছুই না পান, তবে অস্তুত বিদ্যালয়ের ভাষা এবং কেবলমাত্র ব্যাকরণের ব্যাপার! সমস্ত ইংলণ্ডের মধ্যে বিপুলতম অন্ত:করণ যাহ। ছিল, তাহারই ছিল, অথচ তাহার জন্য বরাদ ছিল সাড়ে চার-আনা করিয়া প্রতিদিন । তবু সে হৃদয় ছিল অপরাজিত মহাবলী, প্রকৃত মনুষের হৃদয় ! অক্সফোর্ডে তাহার সেই জুতাজোড়ার গল্পটা সৰ্ব্বদাই মনে পড়ে ; মনে পড়ে কেমন করিয়া সেই দাগকাটা মুখ, হাড়-বাহির-করা কলেজের দীনছাত্র শীতের সময় জীর্ণ জুতা লইয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে ; কেমন করিয়া এক কৃপালু সচ্ছল ছাত্র গোপনে একজোড়া জুতা তাহার দরজার কাছে রাখিয়া দিল, এবং সেই হাড়-বাহির-করা দরিদ্র ছাত্র সেটা তুলিল, কাছে আনিয়া তাহার বহুচিস্তাজালে অস্ফুটদৃষ্টির নিকট ধরিল এবং তাহার পরে জানালার বাহিরে দূর করিয়া ছুড়িয়া ফেলিল। ভিজা পা বলে, পঙ্ক বলে, বরফ বলে, ক্ষুধা বলে, সবই সহ্য হয়, কিন্তু ভিক্ষণ নহে ; আমরা ভিক্ষা সহ করিতে পারি না ! এখানে কেবল রূঢ় আত্মসহায়তা। দৈন্তমালিন্ত, উদ্ভাস্ত বেদন এবং অভাবের অস্ত নাই, তথাপি অস্তরের মহত্ব এবং পৌরুষ ! এই যে জুতা ছুড়িয়া ফেলা, ইহাই এ মানুষটির জীবনের ছাচ । একটি স্বকীয়তন্ত্র (original) মানুষ, এ তোমার গতানুগতিক, ঋণপ্রার্থী, ভিক্ষাজীবী লোক নহে। আর যাই হোক, আমরা আমাদের নিজের ভিত্তির