পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত পথিক রামমোহন রায় ইতিহাসে দেখি অনেক বড়ে বড়ো প্রাচীন সভ্যতা দেশের নদীর সঙ্গে নাড়ির যোগে প্রাণবান। নদী দেশকে দেয় জল, দেয় ফল ; কিন্তু সব চেয়ে বড়ো তার দান, দেশকে সে দেয় গতি। দূরের সঙ্গে বাহিরের সঙ্গে সম্বন্ধ শাখায়িত করে নদী, স্থাবরের মৰ্ম্মের মধ্যে নিয়ে আসে প্রাণের চলৎপ্রবাহ । নদীমাতৃক দেশে নদী যদি একেবারে শুকিয়ে যায় তাহোলে তার মাটিতে ঘটে কৃপণতা, তার অন্ন উৎপাদনের শক্তি ক্ষীণ হয়। দেশের আপন জীবিক। যদি বা কোনোমতে চলে, কিন্তু যে অন্নপ্রাচুর্য্যের দ্বারা বাইরের বৃহৎ জগতের সঙ্গে তার যোগ, সেটা যায় দরিদ্র হয়ে । সে না পারে দিতে, না পারে নিতে। নিজের মধ্যে সে রুদ্ধ হয়ে থাকে, বিভক্ত হয় তার ঐক্যধারা, তার আত্মীয়মিলনের পথ হয় দুর্গম । বাইরের সঙ্গে সে হয় পৃথক, অস্তরের মধ্যে সে হয় খণ্ডিত । যেমন বিশেষ দেশ নদীমাতৃক, তেমনি বিশেষ জনচিত্ত আছে যাকে নদীমাতৃক বলা চলে। সে চিত্তের এমন নিত্যপ্রবাহিত মননধারা যার যোগে বাহিরকে সে আপনার মধ্যে টেনে আনে, নিজের মধ্যেকার ভেদবিভেদ তার ভেসে যায়, যে-প্রবাহ চিন্তার ক্ষেত্রকে নব নব সফলতায় পরিপূর্ণ করে, নিরস্তুর অন্ন জোগায় সকল দেশকে সকল কালকে।