পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত পথিক রামমোহন রায় كاونا হবার অনুশীলনা। এই ঐক্যতত্বের উপলব্ধি যেখানেই দুৰ্ব্বল সেখানে সেই দুৰ্ব্বলতা নানা ব্যাধির আকার ধ’রে দেশকে চারিদিক থেকে আক্রমণ করে। ভারতবর্ষে তার সমস্তাটা সুস্পষ্ট । এখানে নানা জাতের লোক একত্রে এসে জুটেছে। পৃথিবীতে অন্ত কোনো দেশে এমন ঘটেনি। যারা একত্র হয়েছে তাদের এক করতেই হবে, এই হোলো ভারতবর্ষের সৰ্ব্বপ্রথম সমস্তা। এক করতে হবে বাহ্যিক ব্যবস্থায় নয়, আন্তরিক আত্মীয়তায় । ইতিহাস মাত্রেরষ্ট সর্বপ্রধান মন্ত্র হচ্চে সং গচ্ছধবং সং বদধ্বং সং বো মনাংসি জানতাম—এক হয়ে চলব, এক হয়ে বলব, সকলের মনকে এক ব’লে জানব। এই মন্ত্রের সাধনা ভারতবর্ষে যেমন অত্যন্ত দুরূহ এমন আর কোনো দেশেই নয়। যতই দুরূহ হোক এই সাধনায় সিদ্ধিলাভ ছাড়া রক্ষা পাবার অন্ত কোনো পথ নেই। অন্য কোনো দেশের শ্ৰীবৃদ্ধি দেখে যখন আমরা মুগ্ধ হই তখন অনেক সময়ে আমরা তার সিদ্ধির পরিণত রূপটার দিকেই লুদ্ধদৃষ্টিপাত করি, তার সাধনার দুর্গম পথটা আমাদের চোখে পড়ে না। দেখতে পাওয়া গেল স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা, মনে করি, ঐ ব্যবস্থার একটি অনুরূপ প্রতিমা খাড়া করতে পারলেই আমাদের উদ্ধার। ভুলে যাই রাষ্ট্রব্যবস্থাটা দেহমাত্র, সেই দেহ নিরর্থক, যদি তার প্রাণ না থাকে। সেই প্রাণই জাতিগত ঐক্য। অন্ত দেশে সেই ঐক্যেরই আস্তরিক শক্তিতে রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। সে-সব দেশেও সেই ঐক্যে যেখানে যে পরিমাণে বিকার ঘটে সেখানে সেই পরিমাণেই সমস্ত কঠিন হয়ে ওঠে। আমাদের দেশে জাতিতে জাতিতে পার্থক্য, পশ্চিম মহাদেশে শ্রেণীতে শ্রেণীতে। সেই শ্রেণীগত পার্থক্যের মধ্যে আন্তরিক সামঞ্জস্ত যদি না, ঘটে তাহোলে বাহ-ব্যবস্থায় বিপদ নিবারণ হবে না ।