পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত পথিক রামমোহন রায় \ుని দিয়েছিলেন যুরোপীয় চিত্তের পরিচয়, যে চিত্তকে সে যুগের সাম্প্রদায়িক জড়বুদ্ধি দল বেঁধে অস্বীকার করেছিল, কিন্তু যাকে আজ সৰ্ব্বমানব সন্মানের সঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছে। একদিন ইংরেজের সাহিত্যে, তার ইতিহাসে ইংরেজের পরিচয় আমরা পেয়েছিলুম, দেখেছিলুম মানুষের প্রতি তার মৈত্রী, দাসপ্রথার পরে তার ঘৃণা, পরাধীনের মুক্তির জন্তে তার অনুকম্পা, দ্যায়বিচারের প্রতি তার নিষ্ঠা । আজ যদি ভারতের রাষ্ট্রাসন জুড়ে তার এই স্বভাবের নিষ্ঠুর প্রতিবাদ অজস্র দেখতে পাই তবু তার থেকে ইংরেজের চরম পরিচয় গ্রহণ করা সত্য হবে না। যে কারণেই হোক তার অভাবার্থক দিকটা প্রবল হয়ে উঠেছে, এ সমস্ত তারি দুলক্ষণ। আজও ইংলণ্ডে এমন মানুষ আছে ইংরেজ স্বভাবের বিরুদ্ধগামী সমস্ত অন্যায় যাদের হৃদয়কে পীড়িত করছে। বস্তুত সব ইংরেজই যে ইংরেজ এ কথাটাই মনে করাই ভুল। খাটি ইংরেজের সংখ্যা স্বল্প যদিবা হয় আর নিজের সমাজে তারা যদিবা লাঞ্ছন ভোগ করে তবুও তারা সমস্ত ইংরেজেরই প্রতিনিধি। তেমনি একদা যেদিন বাংলাদেশে প্রগাঢ় অন্ধত, কৃত্রিমতা, সাম্প্রদায়িক সঙ্কীর্ণতার মধ্যে রামমোহন রায়ের আগমন হোলো সেদিন এই বিমুখ দেশে তিনিই একলা ভারতের নিত্য পরিচয় বহন ক’রে এসেছেন। তার সর্বতোমুখী বুদ্ধি ও সৰ্ব্বত:প্রসারিত হৃদয় সেদিনকার এই বাংলাদেশের অখ্যাত কোণে দাড়িয়ে সকল মানুষের জন্তে আসন পেতে দিয়েছিল। এ কথা মুক্তকণ্ঠে বলবার দিন এসেছে, যে, যেআতিথ্যভ্রষ্ট আসন রূপণ ঘরের রুদ্ধ কোণের জন্তে, সে আসন নয়, যে-আসনে সৰ্ব্বজন অবাধে স্থান পেতে পারে সেই উদার আসনই চিরন্তন ভারতবর্ষের স্বরচিত ; লক্ষ লক্ষ আচারবাদী তাকে যদি সঙ্কুচিত করে, খণ্ড খণ্ড করে, সমস্ত পৃথিবীর কাছে স্বদেশকে ধিক্কত ক’রে