পাতা:চারিত্রপুজা ২য় সংস্করণ.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারত পথিক রামমোহন রায় १७ সে যা শুনেছে তাই মেনেছে, যে বুলি তার কানে দেওয়া হয়েছে সেই বুলিই সে আউড়িয়েছে। যখন কোনো উৎপাত এসে পড়েছে স্কন্ধে, তখন তাকে বিধিলিপি ব’লে নিয়েছে মেনে । নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে নূতন প্রণালীতে বর্তমানকালীন সংসার-সমস্তার সমাধান করা তার অধিকার-বহিভূত ব'লে স্বীকার করার দ্বারা আত্মাবমাননায় তার সঙ্কোচ ছিল না। মনের আত্মপ্রকাশের ধারা সেদিন এদেশে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। দেশ তখন সামনের কালের দিকে চলেনি পিছনের কালকেই ক্রমাগত প্রদক্ষিণ করেছে—চিন্তাশক্তি যেটুকু বাকি ছিল সে অনুসন্ধান করতে নয়, অমুসরণ করবার জন্তেই । স্বপ্তি যখন আবিষ্ট করে তখনি চুরি যাবার সময়। অন্তরের মধ্যে যখন অসাড়ত, বাইরের বিপদ তখনি প্রবল। চিত্তের মধ্যে যার স্বাধীনতা নেই বাইরের দিক থেকে সে কখনই স্বাধীন হোতে পারে না । অস্তরের দিকে সব-কিছুকে যে অবিসম্বাদে মেনে নেয়, বাইরে অন্যায় প্রভূত্বকেও না-মানবার শক্তি তার থাকে না,—যে-বুদ্ধি অসত্যকে ঠেকায় মনে, সেই বুদ্ধিই অমঙ্গলকে ঠেকায় বহি:সংসারে—নিজ্জীব মন অস্তরে বাহিরে কোনো আক্রমণকেই ঠেকাতে পারে না। তাই সেদিনকার ভারতের ইতিহাসে বারেবারে দেখা গেল ভারতবর্ষ তার মৰ্ম্মাস্তিক পরাভবকে মেনে নিলে আর সেই সঙ্গে মেনে নিলে যা না-মানবার এমন হাজার হাজার জিনিষ। এই যে তার বাইরের দুর্দশার বোঝা পুঞ্জীভূত হয়ে উঠল এ তার অস্তরের অবুদ্ধির বোঝারই সামিল । যখন আমাদের আর্থিক, মানসিক, আধ্যাত্মিক শক্তি ক্ষীণতম, যখন আমাদের দৃষ্টিশক্তি মোহাৰ্বত, স্বষ্টিশক্তি আড়ষ্ট, বর্তমান যুগের কোনো প্রশ্নর নূতন উত্তর দেবার মতো বাণী যখন আমাদের ছিল না, আপন চিত্তদৈন্ত সম্বন্ধে লজ্জা করবার মতো চেতনাও যখন দুৰ্ব্বল, সেই দুৰ্গতির