পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাপুরুষ ତକତ তাহা নহে। যাহা পাইয়াছেন, সে তো তঁহাদের নিজের সৃষ্টি নহে, যাহা গড়িয়াছেন, তাহা তাহদের নিজের রচনা। আজ র্যাহার স্মরণার্থ আমরা সকলে এখানে সমবেত হইয়াছি, তাহাকেও যাহাতে কোনো-একটা দলের দিক হইতে না দেখি, ইহাই আমার নিবেদন। সম্প্রদায়ভুক্ত লোকেরা সম্প্রদায়ের ধ্বজাকেই সর্বোচ্চ করিয়া ধরিতে গিয়া পাছে গুরুকেও তাহার কাছে খর্ব করিয়া দেন, এ আশঙ্কা মন হইতে কিছুতেই দূর হয় না-অন্তত আজিকার দিনে নিজেদের সেই সঙ্কীর্ণতা তাহার প্রতি যেন আরোপ না করি । অবশ্যই, কৰ্ম্মক্ষেত্রে তঁাহার প্রকৃতির বিশেষত্ব নানারূপে দেখা দিয়াছে। তাহার ভাষায়, তঁাহার ব্যবহারে, তাহার কৰ্ম্মে তিনি বিশেষভাবে নিজেকে আমাদের কাছে প্ৰকাশ করিয়াছেন-তাহার সেই স্বাভাবিক বিশেষত্ব জীবনচরিত-আলোচনা-কালে উপাদেয়, সন্দেহ নাই । সেই আলোচনায় তাহার সংস্কার, তাহার শিক্ষা, তাহার প্রতি র্তাহার দেশের ও কালের প্রভাবসম্বন্ধীয় সমস্ত তথ্য আমাদের কৌতুহল নিবৃত্তি করে। কিন্তু সেই সমস্ত বিশেষভাবকে আচ্ছন্ন করিয়া-দিয়া তাহার জীবন কি আর কাহাকেও আমাদের কাছে প্ৰকাশ করিতেছে না ? আলো কি প্ৰদীপকে প্ৰকাশ করিবার জন্য, না প্ৰদীপ আলোকে প্রচার করিবার জন্য ? তিনি র্যাহাকে দেখিতেছেন ও দেখাইতেছেন, যদি আজ সেই-- দিকেই আমাদের সমস্ত দৃষ্টি না যায়, আজ যদি তাহার নিজের বিশেযত্বের দিকে আমাদের দৃষ্টি কোনো অংশে ঠেকিয়া যায়, তবে গুরুর অবমাননা হইবে। মহর্ষি একদিন পরিপূর্ণ-ভোগের মাঝখানে জাগিয়া-উঠিয়া বিলাসমন্দিরের সমস্ত আলোকে অন্ধকার দেখিয়াছিলেন। সেইদিন তিনি তৃষাৰ্ত্তচিত্ত লইয়া পিপাসা মিটাইবার জন্য দুৰ্গমপথে যাত্ৰা করিয়াছিলেন, সে কথা সকলেই জানেন। যেখান হইতে অমৃত-উৎস নিঃসৃত হইয়া