পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহাপুরুষ Seరి সন্ধান করিয়া বাহির করিয়াছেন। কেবল পরের প্রতি নির্ভর করিয়া আলস্যবশত এ র্যাহারা না করিয়াছেন, তাহারা কোনো-একটা ধৰ্ম্মমত, ধৰ্ম্মগ্রন্থ বা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়ে আসিয়া ঠেকিয়াছেন ও সেইখানেই তরঙ্গিত হইয়া উঠিয়া কলরব করিতেছেন, শেষ পৰ্য্যন্ত গিয়া পৌছেন নাই। আমাদের শক্তি যদি ক্ষীণ হয়, আমাদের আকাজক্ষা যদি সত্য না হয়, তবে আমরা শেষ পৰ্য্যন্ত কবে গিয়া পৌছিব, জানি না-কিন্তু মহাপুরুষদের জীবন যেদিন আলোচনা করিতে বসিব, সেদিন যেন সেই শেষলক্ষ্যের কথাটাই সম্মুখে রাখি—তাহাদের স্মৃতি যেন আমাদিগকে পারের ঘাটের আলো দেখায়- তাহাকে যেন আমরা কোনোদিন সাম্প্রদায়িক অভিযানের মশাল করিয়া না তুলি। তাহদের দৃষ্টান্ত আমাদিগকে বন্ধন হইতে উদ্ধার করিয়া দিবে, পরবশত হইতে উত্তীর্ণ করিয়া দিবে, আমাদিগকে নিজের সত্যশক্তিতে, সত্যচেষ্টায়, সত্যপথে প্ৰতিষ্ঠিত করিয়া দিবো ; আমাদিগকে ভিক্ষা দিবে না, সন্ধান দিবে। ; আশ্ৰয় দিবে না, অভয় দিবে ; অনুসরণ করিতে বলিবে না, অগ্রসর হইতে উৎসাহিত করিবে। এক কথায়, মহাপুরুষ তাহারু নিজের রচনার দিকে আমাদিগকে টানিতেছেন না, ঈশ্বরের দিকে আহবান করিতেছেন। আজ আমরা যেন মনকে স্তব্ধ করি, শান্ত করি ;-যাহা প্ৰতিদিন ভাঙিতেছে-গড়িতেছে, যাহা লইয়া তর্কবিতৰ্ক-বিরোধবিদ্বেষের অন্ত নাই, যেখানে মানুষের বুদ্ধির, রুচির, অভ্যাসের অনৈক্য, সে সমস্তকেই মৃত্যুর সম্মুখে যেন আজ ক্ষুদ্র করিয়া দেখিতে পারি ; কেবল আমাদের আত্মার যে শক্তিকে ঈশ্বর আমাদের জীবনমৃত্যুর নিত্যসম্বলক্সপে আমাদিগকে । দান করিয়াছেন, তাহার যে বাণী আমাদের সুখ-দুঃখে, উত্থানে-পতনে, জয়ে-পরাজয়ে চিরদিন আমাদের অন্তরাত্মায় ধ্বনিত হইতেছে, তাহার যে সম্বন্ধ নিগৃঢ় রূপে, নিত্যরূপে, একান্তরূপে আমারই, তাহাই আজি নিৰ্ম্মলচিত্তে উপলব্ধি করিব ; মহাপুরুষের সমস্ত সাধনা যাহাতে সার্থক