পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চারিত্রিপুজা । yaoʻ: সকালে হয় তো শীতের আভাস, বিকালে হয় তো বসন্তের বাতাস দিতে থাকে। দিশী-হাল্কা কাপড় গায়ে দিলে হঠাৎ সন্দি লাগে, বিলাতি মোটাকাপড় গায়ে দিলে ঘৰ্ম্মাক্তকলেবর হইতে হয়। সেইজন্য আজকাল দিশী ও বিলাতি কোন নিয়মই পুরাপুরি খাটে না। যখন বিলাতি-প্রথায় কাজ করিতে যাই, দেশী-সংস্কার অলক্ষ্যে হৃদয়ের অন্তঃপুরে থাকিয়া বাধা দিতে থাকে, আমরা লজায়-ধিক্কারে অস্থির হইয়া উঠি-দেশীভাবে যখন কাজ ফাদিয়া বসি, তখন বিলাতের রাজ-অতিথি আসিয়া নিজের বসিবার উপযুক্ত আসন না পাইয়া নাসা কুঞ্চিত করিয়া সমস্ত মাটি করিয়া দেয় । সভাসমিতি নিয়মমত ডাকি, অথচ তাহ সফল হয় না,-চাদার খাতা খুলি, অথচ তাহাতে যেটুকু অঙ্কপাত হয়, তাহাতে কেবল আমাদের কলঙ্ক ফুটিয়া উঠে। আমাদের সমাজে যেরূপ বিধান ছিল, তাহাতে আমাদের প্রত্যেক গৃহস্থকে প্ৰতিদিন চাদ দিতে হইত। তাহার তহবিল আত্মীয়স্বজন, অতিথি-অভ্যাগত, দীনদুঃখী, সকলের জন্যই ছিল। এখনো আমাদের দেশে যে দরিদ্র, সে নিজের ছোটভাইকে স্কুলে পড়াইতেছে, ভগিনীর বিবাহ দিতেছে, পৈতৃক নিত্যনৈমিত্তিক ক্রিয়া সাধন করিতেছে, বিধবা পিসীমাসীকে সসন্তান পালন করিতেছে। ইহাই দিশীমতে চাদ, ইহার উপরে আবার বিলান্তিমতে চান্দা লোকের সহ্যু হয় কি করিয়া ? ইংরাজ নিজের বয়স্ক ছেলেকে পৰ্য্যন্ত স্বতন্ত্র করিয়া দেয়, তাহার কাছে চাদার দাবী করা অসঙ্গত নহে। নিজের ভোগেরই জন্য যাহার তহবিল, তাহাকে বাহা উপায়ে স্বাৰ্থত্যাগ করাইলে ভালই হয়। আমাদের কয়জন লোকের নিজের ভোগের জন্য কতটুকু উন্থ ত্ত থাকে ? ইহার উপরে বারোমাসে তেরোশিত নৃত্যুন-নূতন অনুষ্ঠানের জন্য চান্দা চাহিতে আসিলে বিলাতি সভ্যতার উত্তেজনাসত্ত্বেও গৃহীর পক্ষে বিনয়রক্ষা করা কঠিন হয়। অ্যাক্ষরুন্ন ক্ৰমাগতই লজ্জিত হইয়া বলিতেছি, এতে-বড়ো অনুষ্ঠানপত্র পুরুষন্ধির