পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগর চরিত २१ ' ' চরিত্রের বিস্তর নিকটসাদৃশ্য দেখিতে পাই। অথচ তাহা অনুকরণগত সাদৃশ্য নহে। বেশভূষায়, আচারে-ব্যবহারে তঁাহারা সম্পূর্ণ বাঙালী ছিলেন ; স্বজাতীয় শাস্ত্রজ্ঞানে তঁহাদের সমতুল্য কেহ ছিল না ; স্বজাতিকে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের মূলপত্তন তাহারাই করিয়া গিয়াছেন— অথচ নিৰ্ভীক বলিষ্ঠতা, সত্যাচারিতা, লোকহিতৈষী, দৃঢ়প্ৰতিজ্ঞ এবং আত্মনির্ভরতায় তাহারা বিশেষরূপে যুরোপীয় মহাজনদের সহিত তুলনীয় ছিলেন। যুরোপীয়দের তুচ্ছ বাহ অনুকরণের প্রতি র্তাহারা যে অবজ্ঞাপ্ৰকাশ করিয়াছেন, তাহাতেও তঁহাদের যুরোপীয়সুলভ গভীর আত্মসম্মানবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। যুরোপীয় কেম্ন, সরল সত্যপ্রিয় সাঁওতালেরাও যে অংশে মনুষ্যত্বে ভূষিত, সেই অংশে বিদ্যাসাগর তাহার স্বজাতীয় বাঙালীর অপেক্ষা সাওতালের সহিত আপনার অন্তরের যথার্থ ঐক্য অনুভব করিতেন । মাঝে মাঝে বিধাতার নিয়মের এরূপ আশ্চৰ্য্য ব্যতিক্রম হয় কেন, বিশ্বকৰ্ম্ম যেখানে চারকোটি বাঙালী নিৰ্ম্মাণ করিতেছিলেন, সেখানে হঠাৎ দুইএকজন মানুষ গড়িয়া বসেন কেন, তাহা বলা কঠিন । কি নিয়মে বড়োলোকের অভু্যত্থান হয়, তাহা সকল দেশেই রহস্যময়— আমাদের এই ক্ষুদ্ৰকৰ্ম্ম ভীরুহৃদয়ের দেশে সে রহস্য দ্বিগুণতর দুৰ্ভেদ্য । বিদ্যাসাগরের চরিত্রসূষ্টিও রহস্যাবৃত-কিন্তু ইহা দেখা যায়, সে চরিত্রের ছাঁচ ছিল ভালো। ঈশ্বরচন্দ্রের পূর্বপুরুষের মধ্যে মহত্ত্বের উপকরণ প্রচুর পরিমাণে সঞ্চিত ছিল। বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করিলে अथ6भछे ऊँीशन পিতামহ রামজয় তর্কভূষণ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। লোকটি অনন্যসাধারণ ছিলেন, তাহাতে সন্দেহমাত্র নাই । মেদিনীপুর জেলায় বনমালীপুরে তঁহার পৈতৃক বাসস্থান ছিল । তাহার পিতার মৃত্যুর পরে বিষয়বিভাগ লইয়া সহোদরদের সহিত মনান্তর