পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিদ্যাসাগরচারিত . ७s । আর একটিমাত্র ঘটনা উল্লেখ করিলে তর্কভূষণের চরিত্রচিত্র সম্পূৰ্ণ হইবে । r ১৭৪২ শকের ১২ই আশ্বিন মঙ্গলবারে বিদ্যাসাগরের পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায় অদূরে কোমরগঞ্জে মধ্যাহ্নে হাট করিতে গিয়াছিলেন। রামজয় তর্কভূষণ র্তাহাকে ঘরের একটি শুভসংবাদ দিতে বাহির হইয়াছিলেন। পথের মধ্যে পুত্রের সহিত দেখা হইলে বলিলেন, “একটি এড়েবাছুর হয়েছে।” শুনিয়া ঠাকুরদাস ঘরে আসিয়া গোয়ালের অভিমুখে গমন করিতেছিলেন ; তর্কভূষণ হাসিয়া কহিলেন, “ওদিকে নয়, এদিকে এস”—বলিয়া সুতিকাগৃহে লইয়া নবপ্রস্তুত শিশু ঈশ্বরচন্দ্ৰকে নির্দেশ করিয়া দেখাইলেন । এই কৌতুকহাস্যরশ্মিপাতে রামজয়ের বলিষ্ঠ উন্নতচরিত্র আমাদের নিকট প্ৰভাতের গিরিশিখরের ন্যায় রমণীয় বোধ হইতেছে। এই হাস্যময় তেজোময় নিভীক ঋজুস্বভাব পুরুষের মতো আদর্শ বাংলাদেশে অত্যন্ত বিরল না হইলে বাঙালির মধ্যে পৌরুষের অভাব হইত না । আমরা তাহার চরিত্ৰবৰ্ণনা বিস্তারিতরূপে উদ্ধৃত করিলাম, তাহার কারণ, এই দরিদ্র ব্ৰাহ্মণ র্তাহার পৌত্রকে আর কোন সম্পত্তি দান করিতে পারেন নাই, কেবল যে অক্ষয়সম্পদের উত্তরাধিকারবণ্টন একমাত্র ভগবানের হস্তে, সেই চরিত্ৰমাহাত্ম্য অখণ্ডভাবে তাহার জ্যেষ্ঠপৌত্রের অংশে রাখিয়া গিয়াছিলেন । পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাধারণ লোক ছিলেন না । যখন । তাহার বয়স ১৪৷১৫ বৎসর, এবং যখন তাহার মাতা দুৰ্গাদেবী চরকায় সুতা কাটিয়া একাকিনী তাহার দুই পুত্র এবং চারি কন্যার ভরণপোষণে প্ৰবৃত্ত ছিলেন, তখন ঠাকুরদাস উপাৰ্জনের চেষ্টায় কলিকাতায় প্রস্থান করিলেন । ... . . . . . কলিকাতায় আসিয়া প্ৰথমে তিনি তাহার আত্মীয় জগন্মোহন, তর্ক