পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झभ८भट्ञ झ ԳՀ» যেরূপভাবে বুঝি, ঈশ্বরের অন্য কোনো বিদেশীয় নামে বিদেশীয়েরা কখনই তাহাকে ঠিক সেরূপভাবে বুঝে না । বুঝে বা না বুঝে, জানি না, কিন্তু ব্ৰহ্ম বলিতে আমাদের মনে যে ভাবের উদয় হইবে, ঈশ্বরের অন্য কোনো বিদেশীয় নামে আমাদের মনে সে ভাব কখনই উদয় হইবে না। ব্ৰহ্ম একটি কথার কথা নহে, যে ইচ্ছা পাইতে পারে না, যাহাকে ইচ্ছা দেওয়া যায় না। ব্ৰহ্ম আমাদের পিতামহদের অনেক সাধনার ধন ;-সমস্ত সংসার বিসৰ্জন দিয়া, সমস্ত জীবন ক্ষেপণ করিয়া, নিভৃত অরণ্যে ধ্যানধারণা করিয়া আমাদের ঋষিরা আমাদের ব্ৰহ্মকে পাইয়াছিলেন । আমরা তাহাদের সেই আধ্যাত্মিক সম্পদের উত্তরাধিকারী । আর কোনো জাতি ঠিক এমন সাধনা করে নাই, ঠিক এমন অবস্থায় পড়ে নাই, এইজন্য ব্ৰহ্মকে প্ৰাপ্ত হয় নাই। প্ৰত্যেক জাতি বিশেষ সাধনা অনুসারে বিশেষ ফল প্ৰাপ্ত হয়, সেই ফল তাহারা অন্য জাতিকে দান করে। এইরূপে সমস্ত পৃথিবীর উপকার হয়। আমাদের এত সাধনার ফল কি আমরা ইচ্ছাপূর্বক অবহেলা করিয়া ফেলিয়া দিব ? উদ্ভিজ ও পশুমাংসের মধ্যে যে জীবনী-শক্তি আছে, তাহা যে আমরা স্বায়ত্ত করিতে পারি, তাহার কারণ, আমাদের নিজের জীবন আছে । আমাদের নিজের প্রাণ না থাকিলে আমরা নূতন প্ৰাণ উপাৰ্জন করিতে পারি না। আমাদের প্রাণ না থাকিলে উদ্ভিজ্জ, পশু, পক্ষী, কীট প্রভৃতি অন্য প্রাণীরা আমাদিগকে গ্ৰহণ করিত। এ জগতে মৃত টিকিতে পারে না, জীবিতের মধ্যে বিলীন হইয়া যায়। রামমোহন রায় যদি দেখিতেন, আমাদের জীবন নাই, তবে পারসীক মৃতদেহের ন্যায় আমাদিগকে মৃতভবনে ফেলিয়া রাখিতে দিতেন, খৃষ্টধৰ্ম্ম প্রভৃতি অন্যান্য জীবিত প্ৰাণীর উদারস্থ হইতে দিতেন। কিন্তু তাহা না করিয়া তিনি চিকিৎসা সুরু করিয়া দিলেন। তিনি দেখিলেন, জীবন আমাদের মধ্যে আচ্ছন্ন হইয়া আছে, তাহাকেই তিনি জাগ্ৰত করিয়া তুলিলেন।