পাতা:চারিত্রপূজা (১৯৩০) - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মহৰ্ষির আদ্যকৃত্য উপলক্ষ্যে প্ৰাৰ্থনা S\S) অধিকারী হইয়া থাকেন, তবে নিশ্চয়ই তাহারা পিতার পুণ্যপ্ৰসাদে বহুতর লক্ষপতির অপেক্ষা সৌভাগ্যবান হইয়াছেন। আজ এই কথা বলিয়া আমরা সকলের কাছে গৌরব করিতে পারি যে, এতকাল আমাদের পিতা যেমন আমাদিগকে, দারিদ্র্য হইতে রক্ষা করিয়াছিলেন, তেমনি ধনের গণ্ডীর মধ্যেও আমাদিগকে বদ্ধ করিয়া রাখেন নাই। পৃথিবী আমাদের সম্মুখে মুক্ত ছিল—ধনীদরিদ্র। সকলেরই গৃহে আমাদের যাতায়াতের পথ সমান প্ৰশস্ত ছিল। সমাজে যাহাঁদের অবস্থা আমাদের অপেক্ষা হীন ছিল, তাহারা সুহৃদভাবেই আমাদের পরিবারে অভ্যর্থনা প্ৰাপ্ত হইয়াছেন, পারিষদভাবে নহেভবিষ্যতে আমরা ভ্ৰষ্ট হইতে পারি, কিন্তু আমরা ভ্ৰাতাগণ দারিদ্র্যের অসম্মানকে এই পরিবারের ধৰ্ম্ম বলিয়া জানিতে পাই নাই। ধনের সঙ্কীর্ণতা ভেদ করিয়া মনুস্যসাধারণের অকুষ্ঠিত সংস্রবলাভ র্যাহার প্রসাদে আমাদের ঘটিয়াছে, তাহাকে আজ আমরা নমস্কার করি । তিনি আমাদিগকে যে কী পরিমাণে স্বাধীনতা দিয়াছেন, তাহা আমরা ছাড়া আর কে জানিবো! যে ধৰ্ম্মকে তিনি ধ্যাকুল সন্ধানের দ্বারা পাইয়াছেন, যে ধৰ্ম্মকে তিনি উৎকট বিপদের মধ্যেও রক্ষা করিয়াছেন, "যে ধৰ্ম্মের উদ্দেশে তিনি তাহার সমস্ত জীবন উৎসর্গ করিয়াছেন, সেই ধৰ্ম্মকে তিনি আপনার গৃহের মধ্যেও শাসনের বস্তু করেন নাই । র্তাহার দৃষ্টান্ত আমাদের সম্মুখে ছিল, তাহার উপদেশ হইতে আমরা বঞ্চিত হই নাই, কিন্তু কোনো নিয়মের শাসনে তিনি আমাদের বুদ্ধিকে, আমাদের কৰ্ম্মকে বদ্ধ করেন নাই । তিনি কোনো বিশেষ মতকে অভ্যাস বা অনুশাসনের দ্বারা আমাদের উপরে স্থাপন করিতে চান নাই -ঈশ্বরকে ধৰ্ম্মকে স্বাধীনভাবে সন্ধান করিবার পথ তিনি আমাদের সম্মুখে মুক্ত করিয়া দিয়াছেন । এই স্বাধীনতার দ্বারা তিনি আমাদিগকে পরম সম্মানিত করিয়াছেন—তাহার প্রদত্ত সেই সম্মানের যোগ্য হইয়া,