পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লাফ দিয়ে উঠে তার মুখ চেপে ধরলুম, বললুম বক্তৃতা যদি কর, তবে তােমার পুরােনাে জন্মের দিনটা এইখানেই কাবার। বটু বললে, ছী ছী অতীনবাবু, বক্তৃতার প্রাণহত্যা?—নবযুগ, নবজন্ম, মৃত্যুর তােরণ প্রভৃতি ওদের বাঁধাবুলিগুলাে শুনলে আমার লজ্জা করে। ওরা প্রাণপণে চেষ্টা করেছে আমার মনের উপর ওদের দলের তুলি বুলােতে,—কিছুতে রং ধরল না।”

 “অন্তু, নির্বোধ আমি; আমিই ভেবেছিলুম তােমাকে মিলিয়ে নেব আমাদের সকল পদাতিকের সঙ্গে এক উর্দি পরিয়ে।”

 “তাই আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওদের সঙ্গে ঘােরতর দিদিয়ানা করতে। ভেবেছিলে আমার সংশােধনের পক্ষে কিছু ঈর্ষার প্রয়ােজন আছে। স্নেহত্ন কুশলসম্ভাষণ বিশেষ মন্ত্রণা অনাবশ্যক উদ্‌বেগ মনিহারির রঙিন সামগ্রীর মতাে ওদের সামনে সাজিয়ে রেখেছিলে তােমার পসরায়। আজও তােমার করুণ প্রশ্ন কানে শুনতে পাচ্ছি, নন্দকুমার তােমার চোখমুখ লাল দেখছি কেন! বেচারা ভালােমানুষ, সত্যের অনুরােধে মাথাধরা অস্বীকার করতে না-করতে ছেঁড়া ন্যাকড়ার জলপটি এসে উপস্থিত। আমি মুগ্ধ তবু বুঝতুম এই অতি অমায়িক

১১৭