পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এখনই পালাও অন্য ঠিকানায়। আমি আছি এলাদির খবর নিতে।”

 এলা অখিলকে বুকের কাছে টেনে নিয়ে তার মাথায় চুমো খেয়ে বললে, “সোনা আমার, লক্ষ্মী আমার, ভাই আমার, তুই চলে যা। তোর জন্যে কখানা নোট আমার আঁচলে বেঁধে রেখেছি, তোর এলাদির আশীর্বাদ। আমার পা ছুঁয়ে বল্, এখনই তুই যাবি, দেরি করবিনে।”

 অতীন বললে, “অখিল আমার একটি পরামর্শ তোমাকে শুনতেই হবে। যদি তোমাকে কখনো কোনো প্রশ্ন কেউ জিজ্ঞাসা করে তুমি ঠিক কথাই বলবে। বোলো এই রাত এগারোটার সময় আমিই তোমাকে জোর করে এ-বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছি। চলো কথাটাকে সত্য করে আসি।”

 এলা আর-একবার অখিলকে কাছে টেনে নিয়ে বললে, “আমার জন্যে ভাবিসনে ভাই। তোর অন্তুদা রইল, কোনো ভয় নেই।”

 অখিলকে যখন ঠেলে নিয়ে অতীন চলেছে এলা বললে, “আমিও যাই তোমার সঙ্গে অন্তু।”

 আদেশের স্বরে অতীন বললে, “না, কিছুতেই না।”

 ছাদের ছোটো পাঁচিলটার উপর বুক চেপে ধরে এলা দাঁড়িয়ে রইল—কণ্ঠের কাছে গুমরে গুমরে উঠতে লাগল

১২৭