পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এলা বললে, “আমি সেই চিঠির উপরে কেবল লিখে দিলুম, পিশাচ। আর-কিছু নয়।”

 “খবর পেয়েছি, সেই বটুই আসবে কাল পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে। তোমার সম্মতি পেলেই বাঘের সঙ্গে রফা করে তোমাকে কুমিরের গর্তে আশ্রয় দেবার হিতব্রতে সে উঠে পড়ে লাগবে। তার হৃদয় কোমল।”

 এলা অতীনের পা জড়িয়ে ধরে বললে, “মারো আমাকে অন্তু, নিজের হাতে। তার চেয়ে সৌভাগ্য আমার কিছু হতে পারে না।” মেঝের থেকে উঠে দাড়িয়ে অতীনকে বার বার চুমো খেয়ে খেয়ে বললে, “মারো এইবার মারো।” ছিঁড়ে ফেললে বুকের জামা।

 অতীন পাথরের মূর্তির মতো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।

 এলা বললে, “একটুও ভেবো না অন্তু। আমি যে তোমার, সম্পূর্ণ ই তোমার—মরণেও তোমার। নাও আমাকে। নোংরা হাত লাগতে দিয়ো না আমার গায়ে, আমার এ দেহ তোমার।”

 অতীন কঠিন সুরে বললে, “যাও এখনই শুতে যাও, হুকুম করছি শুতে যাও।”

 অতীনকে বুকে চেপে ধরে এলা বলতে লাগল। “অন্তু, অন্তু আমার, আমার রাজা, আমার দেবতা,

১৩১