পাতা:চার অধ্যায় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 “মেয়েদের বিয়ের আগেকার কান্না প্রভাতে মেঘডম্বরং।”

 “আপনি নিষ্ঠুর।”

 “কেননা, মানুষকে যে-বিধাতা ভালোবাসেন তিনি নিষ্ঠুর, জন্তুকেই তিনি প্রশ্রয় দেন।”

 “আপনি জানেন উমা সুকুমারকে ভালোবাসে।”

 “সেইজন্যেই ওকে তফাত করতে চাই।”

 “ভালোবাসার শাস্তি?”

 “ভালোবাসার শাস্তির কোনো মানে নেই। তাহলে বসন্ত রোগ হয়েছে বলেও শাস্তি দিতে হয়। কিন্তু গুটি বেরোলে ঘর থেকে বের করে রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোই শ্রেয়।”

 “সুকুমারের সঙ্গে বিয়ে দিলেই তো হয়।”

 “সুকুমার তো কোনো অপরাধ করেনি। ওর মতো ছেলে আমাদের মধ্যে কজন আছে?”

 “ও যদি নিজেই উমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়?”

 “অসম্ভব নয়। সেইজন্যেই এত তাড়া। ওর মতো উঁচুদরের পুরুষের মনে বিভ্রম ঘটানো মেয়েদের পক্ষে সহজ;―সৌজন্যকে প্রশ্রয় বলে সুকুমারের কাছে প্রমাণ করা দুই-এক ফোঁটা চোখের জলেই সম্ভব হতে পারে। রাগ করছ শুনে?”

২৫