পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থেকে কাঞ্চি মদ্র অন্ধ পৌণ্ড প্রভৃতি কত দেশ দেশান্তর দেখবার আছে, কত মন্দির কত গুহা, কত তীর্থ ইত্যাদি ইত্যাদি,” আমার মন সেই এঞ্জিনটার মত চুপ করে গম্ভীর হয়ে রইল, সাড়াই দেয় না। স্পষ্ট বোঝা গেল দক্ষিণের দিকে সে আর এক পাও বাড়াবে না। মনের সঙ্গে বেঙ্গল নাগপুরের এঞ্জিনের একটা মস্ত প্রভেদ এই এঞ্জিন বিগড়ে গেলে আর একটা এঞ্জিন টেলিফোন করে আনিয়ে নেওয়া যায়, কিন্তু মন বিগড়লে সুবিধামত আর একটা মন পাই কোথা থেকে? সুতরাং মাদ্রাজ চারশো মাইল দূরে পড়ে রইল আর আমি গতকল্য শনিবার মধ্যাহ্নেং সেই হাবড়ায় ফিরে এলুম। যে-শনিবার একদা তার কৌতুকহাস্য গোপন করে আমাকে মাদ্রাজের গাড়িতে চড়িয়ে দিয়েছিল, সেই শনিবারই আর একদিন আমাকে হাওড়ায় নামিয়ে দিয়ে তার নিঃশব্দ অট্টহাস্যে মধ্যাহ্ন আকাশ প্রতপ্ত করে তুললে। এই ত গেল আমার ভ্রমণ বৃত্তান্ত। কিন্তু তুমি যখন হিমালয় যাত্রায় বেরিয়েছিলে তখন নক্ষত্র সভায় তোমার সম্বন্ধেও ত ভাল শুশ্রুষায় তুমি সেরে আসবে কিন্তু তারাগুলো কেন কুমন্ত্রণা করতে লাগল। আমার বিশ্বাস কি জান, অনেকগুলো ঈর্ষাপরায়ণ তারা আছে, তারা তোমার ভানুদাদাকে একেবারেই পছন্দ করে না। প্রথমত আমার নামটাই তাদের অসহ্য বোধ হয়, এই জন্যে বদনাম করবার সুবিধা পেলে ছাড়ে না। তারপরে দেখেচে আমার সঙ্গে আমার আকাশের মিতার খুব ভাব আছে সেইজন্যে নক্ষত্রগুলো আমাকে তাদের শত্রুপক্ষ বলে ঠিক করেছে। যাই হোক, আমি ওদের কাছে হার মানবার ছেলে নই। ওরা যা করবার করুক আমি দিনের আলোর দলে রইলুম। তোমাকে কিন্তু কুচক্ৰী নক্ষত্রগুলোর উপরে টেক্কা দিতে হবে— বেশ শরীরটাকে সেরে নিয়ে, মনটাকে প্রফুল্ল করে, হৃদয়টাকে শাস্ত কর, জীবনটাকে পূর্ণ কর— তারপরে লক্ষ্যকে উদ্ধে রেখে অপরাজিত চিত্তে সংসারের সুখ দুঃখের ভিতর দিয়ে চলে సిJ9