পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চেয়ে বড় সম্পদ সব চেয়ে বড় আনন্দ তার ভাণ্ডার যদি বাইরে থাকে তাহলে আমাদের ভারি মুন্ধিল। কেন না বাইরের পথে বাধা ঘটবেই, বাইরের দরজা মাঝে মাঝে বন্ধ হবেই। বাইরের কাছ থেকে সেই ভিক্ষা চাওয়ার অভ্যাস আমাদের ছেড়ে দিতে হবে। আমাদের ইচ্ছা বাইরের দিকে বাধা পেলেও আমরা যেন অস্তরের মধ্যে পূর্ণতা অনুভব করে শাস্তি পেতে পারি। নইলে নিজেও অশান্ত হই, চারিদিককেও অশাস্ত করে তুলি। এই সংসার থেকে যে প্রীতি যে কল্যাণ আমরা অস্তরের মধ্যে পেয়েচি সেই আমাদের অন্তরতম লাভের জন্যে যেন আমরা গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ হই, বাইরের দিকে যে-কিছু জিনিস পাই নি, সেদিক থেকে যা-কিছু বাধা আসচে, তারই ফৰ্দ্দটাকে লম্বা করে তুলে যদি খুৎ ধুৎ করি, ছট্‌ফট্‌ করতে থাকি, তাহলে অকৃতজ্ঞতা হয় এবং সেই চঞ্চলতা নিতান্তই বৃথা নিজের অন্তর বাহিরকে আহত করে মাত্র। স্থির হব, প্রশাস্ত হব, মনকে প্রসন্ন রাখব, তাহলেই আমাদের মন এমন একটি স্বচ্ছ আকাশে বাস করবে যাতে করে অমৃত লোক থেকে আনন্দ-জ্যোতি আমাদের মনকে স্পর্শ করতে বাধা পাবে না। তোমার প্রতি তোমার ভানুদাদার এই আশীৰ্ব্বাদ যে, তুমি আপনার ইচ্ছাকে একান্ত তীব্র করে চিত্তকে কাঙাল-বৃত্তিতে দীক্ষিত কোরো না— বিধাতার কাছ থেকে যা-কিছু দান পেয়েছ তাকে অস্তরের মধ্যে নম্রভাবে গ্রহণ এবং অবিচলিতভাবে রক্ষা কর। শান্তি হচ্চে সত্য এবং আনন্দ উপলব্ধি করবার সৰ্ব্বাপেক্ষা অনুকূল অবস্থা— সংসারের অনিবাৰ্য্য আঘাতে ব্যাঘাতে ইচ্ছার অনিবাৰ্য্য নিষ্ফলতায় সেই সুস্নিগ্ধ শান্তি যেন তোমার মধ্যে সৰ্ব্বদা বিক্ষুব্ধ না হয়। ইতি ১০ই কার্তিক ১৩২৫ তোমার ভানুদাদা >br