পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জমানো রয়েচে যার ভিতরকার চিঠিরই কোনও উদ্দেশ পাওয়া যায় না । আর দশ বৎসর পরে রাণু যখন তার ভানুদাদার প্রাইভেট সেক্রেটারির পদে নিযুক্ত হয়ে আসবে তখন এই সমস্ত জঞ্জালগুলোর সদগতি হতে পারবে। কি বল ? কিন্তু ভানুদাদার যেমন নানা প্রকার দরকারী চিঠিপত্র সুরও হারিয়ে যায়— প্রাইভেট সেক্রেটারির কাজ হবে আমার সেই সুরগুলিকে কুড়িয়ে ধরা য] রাখা— অতএব তোমার সেই শিশু মহাভারতের সন্ন্যাস ধৰ্ম্ম বাদ দিয়ে কিছুদিন তোমাকে এসরাজ যন্ত্রটা নিয়ে পড়তে হবে। ছড়ি টেনে টেনে যখন বেশ হাত দোরস্ত হয়ে আসবে তখন তোমাকে আমার সুর-কুড়োনীর কাজে লাগিয়ে দেব। তখন গান তৈরি করে আমাকে আর হা-দিনু, জো-দিনু করে বেড়াতে হবেনা। কিন্তু মনে আছে, আমাকে তোমার রূপকথা পাঠিয়ে দিতে হবে— সেই অলাবুনন্দিনীর “কাহানী”, আর সেই “চমকিলা” “সোনে কি তরহ”, চুলওয়ালী রাজকুমারীর কথা”— তাছাড়া আর একটি কথা মনে রাখতে হবে, মন খারাপ কোরো না— লক্ষ্মী মেয়ে হয়ে প্রসন্ন হাসি হেসে ঘর উজ্জ্বল করে থাকবে। সকলেই বলবে রাণু এমন সোনে কি তরহ হাসি পেয়েচে কোন পারিজাতের গন্ধ থেকে, কোন নন্দন বীণার ঝঙ্কার থেকে, কোন প্রভাত তারার আলোক থেকে, কোন সুরসুন্দরীর সুখস্বপ্ন থেকে, কোন মন্দাকিনীর চলোৰ্ম্মি-কল্লোল থেকে, কোন— কিন্তু আর দরকার নেই এখনকার মত এই কটাতেই চলে যাবে— কেননা কাগজ ফুরিয়ে এসেচে, দিনও অবসরপ্রায়, অপরাহুের ক্লাস্ত রবির আলোক মান হয়ে এসেচে। তোমার ভানুদাদা ২ আগ্রহায়ণ ১৩২৫