পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 ዓሊ ২৯ জুন ১৯১৯ [ শান্তিনিকেতন ] কল্যাণীয়াসু সোলনে খুব-যে বৃষ্টি হচ্চে কুয়াশা হচ্চে এতে আমি কেন খুসি হয়েচি বলব ? আমি খুব জাক করে বলতে পারব এখানে বৃষ্টি হচ্চে না কুয়াশা হচ্চে না। তুমি হয় ত উত্তরে বলবে, তাহলে নিশ্চয় খুব গরম হচ্চে— সে কথাও বলবার জো নেই। দিবি ঠাণ্ডা হাওয়া বইচে; আকাশে মেঘগুলো আমার দেখা-দেখি কুঁড়েমি শিখেচে,— যখন খেয়াল যায় একটু আধটু বর্ষণ করে মাত্র, তারপরে অষ্টপ্রহর আকাশের এ কোণে ও কোণে হেলান দিয়ে বসে থাকে। আমি যে ওদের অকৰ্ম্মণ্যতা নিয়ে একটু ভৎসনা করব আমার সে জো নেই— নিজে প্রায় অষ্ট প্রহর পড়ে থাকি জানলার কাছে কেদারায় হেলান দিয়ে— কাজকৰ্ম্মের নামগন্ধ নেই। ওরা যেমন খাপছাড়া রকম করে একটু আধটু বৃষ্টি বর্ষণ করে আমিও তেমনি এক আধবার খাতাটা টেনে নিয়ে মাথায় যা আসে একটু আধটু লিখে ফেলি । এমনিতর নেহাৎ কুঁড়েমি করতে করতেও লেখা মন্দ জমে নি— প্রায় একখানা বইয়ের মত হয়ে এল। কবি মানুষের ঐ হচ্চে মজা, যে-সময়ে কুঁড়েমি জমে সেই সময়েই তাদের কাজ বেশি হয়। আর যে সময়ে বাস্ত থাকি সেই সময়ে সব কাজ নষ্ট হয়।— যাই হোক তোমাদের ওখানে খুব বৃষ্টি হোক খুব কুয়াশা হোক একেবারে তোমরা দলেবলে হুড়মুড় করে পবর্বত থেকে নেমে এস— নামতে নামতে একেবারে এই শাস্তিনিকেতনের প্রাস্তরে এসে উপস্থিত হও— তার পরে গল্প গান কবিতা ঝগড়া ভাল তর্ক বিতর্ক নিবিড় হয়ে উঠবে, আষাঢ়ের মেঘের মত। মনে কোরোনা এখানে তোমাদের সকলকে ধরবেনা। খুব হাত পা ছড়িয়ে ধরবে। > ૭ ૨