পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাখতে পারে এমন অভিভাবক কেউ না থাকাতে আমি হয়ত উচ্ছম্বল হয়ে যেতে পারি এমন আশঙ্কা আছে। আপাতত যা তা’ বই পড়তে আরম্ভ করেচি, কেউ নেই আমাকে ঠেকায়। তার মধ্যে লজিকের বই একখানাও নেই। এমনি করে পড়া ফাকি দিয়ে বাজে পড়া পড়ে পড়ে ২৭ বছর কেটে গেল, এখন চেতনা হওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তার কোন লক্ষণ নেই। আমি ভেবেছিলুম সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তোমাদের ছুটি, তা যখন নেই তখন শারদোৎসব দেখা তোমাদের পক্ষে অসম্ভব। কারণ ওটা হচ্চে ছুটির নাটক— ওর সময়ও ছুটির, ওর বিষয়ও ছুটির ; রাজা ছুটি নিয়েচে রাজত্ব থেকে, ছেলেরা ছুটি নিয়েচে পাঠশালা থেকে— তাদের আর কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই কেবল একমাত্র ইচ্ছে, “বিনা কাজে বাজিয়ে বাশি কাটবে সকল বেলা।” ওর মধ্যে একটা উপনন্দ কাজ করচে কিন্তু সেও তার ঋণ থেকে ছুটি পাবার কাজ ! তোমরা যখন ছুটি পাবে আমরা তখন বম্বাই অভিমুখে রেলপথে ছুটেচি । কিন্তু সে পথ মোগলসরাই দিয়ে যায় না, সে হচ্চে বেঙ্গল নাগপুর লাইন। তার পরে বম্বাই হয়ে মাদ্রাজ, মাদ্রাজ হয়ে মালাবার, মালাবার হয়ে সিংহল, সিংহল হয়ে পুনশ্চ বম্বাই, এমনি বে বৌ শব্দে ঘুরপাক খেতে খেতে অবশেষে একদিন নভেম্বর মাসের কোনো এক তারিখে শান্তিনিকেতনে এসে একখানা লম্বা কেদারার উপরে চৎ হয়ে পড়ব। তার পরেই আবার সুরু হবে সাতই পৌষের পালা— তার পরে আরো কত কি আছে তার ঠিক নেই। ছুটির নাটক লিখলেই কি ছুটি পাওয়া যায় ? আমি ইস্কুল পালিয়েও ছুটি পেলুম না, ইস্কুলের আবৰ্ত্তের মধ্যে লাঠিমের মত ঘুরতে লাগলুম– অঙ্ক কষতে টিলেমি করলুম। আজ্ঞ চাদার অঙ্কের ধ্যান ক ৩ করতে আহার নিদ্রা বন্ধ— ইংরেজি প্রবাদে এইরকম ব্যাপারলেই বলে থাকে ভাগোর বিদ্রুপ। এতদিন পরে আমাদের এখানে শরতের রৌদ্রোজ্জ্বল চেহারা দেখা ১৯৩ > ケ載> ●