পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনেকদিন আমার বক্তৃতাদি না হওয়াতে সভ্যেরা দুঃখিত ছিল। তাড়াতাড়ি গিয়ে ইংরেজ কবি ব্রাউনিঙের একটা নাটক তাদের শুনিয়ে এলুম। আমি বইখানা ধরে আগাগোড়া বাংলায় তর্জমা করে বলে গিয়েছিলুম। কাজটা নিতান্ত সোজা নয়, বিশেষত ব্রাউনিঙের মত কবির দুবোধ ও জটিল লেখা। শ্রোতাদের ভাল লেগেছিল। আমার কাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েচে— আগে আমার কাজের ক্ষেত্র শাস্তিনিকেতনেই বদ্ধ ছিল এখন শাস্তিনিকেতন আর কুলকাতার মাঝখানে প্রায়ই আমাকে খেয়া দিতে হয় । তার পরে মাঝে মাঝে বাংলাদেশের বাইরেও কলকাতা থেকে ফিরে এসে দেখি তোমার চিঠি আমার ডেস্কের উপর চিৎ হয়ে পড়ে আছে। তা ছাড়া আরো অনেক চিঠি এসে জমেচে— কোনোটা এদেশী কোনোটা বিদেশী। অনেক কাজ আছে যা শেষ করতে পারলেই তার থেকে নিস্কৃতি পাওয়া যায় কিন্তু চিঠি জিনিসটা আজ শেষ করলেই আবার কাল এসে জমে— চিরজীবন এই রকমই চলবে। কাল আসচে ৭ই পৌষ। চারদিকে ব্যস্ততার অস্ত নেই। এবার দুদিন ধরে মেলা চলবে— যাত্রা, কীৰ্ত্তন, বায়োস্কোপ, আতসবাজি, কৃষিপ্রদর্শনী, শিল্পপ্রদর্শনী ইত্যাদি নানাবিধ ব্যাপার আছে। অতিথি সমাগম কম হবে না। এই নিয়ে দুদিন আমাকে বিষম ব্যস্ত থাকতে হবে। কদিন ধরে শীত পড়েচে খুব। হি হি করে উত্তর পশ্চিম থেকে হাওয়া দিচ্চে, আর আমলকির পাতাগুলো খসে খসে উড়ে উড়ে পড়চে। তোমাদের ওখানে নিশ্চয়ই এর চেয়ে অনেক বেশি শীত।— আচ্ছা রাণু একবার . # 丐 যুরোপে গিয়ে তোমার পড়ে শুনে আসতে ইচ্ছে করে? তোমার যে রকম বুদ্ধি, যে রকম শেখবার শক্তি ও পড়বার নিষ্ঠা তাতে সেখান থেকে তুমি অনেক উন্নতি লাভ করতে পার। আমার অনেকবার মনে হয়েচে তোমাকে ফ্রান্সে পাঠালে তুমি নানা বিদ্যায় বিদুষী হয়ে ১৯৭