পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দু চার দিনের মধ্যে সুজলাং সুফলাং মলয়জশীতলাং বঙ্গভূমিকে প্রণাম করতে যাত্রা করব। ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত হয়ে পড়েচি। যাই হোক ক্রিস্টমাসের পূৰ্ব্বেই ফিরব। তোমার বাবজাকে লিখে দিয়েচি তোমাকে শান্তিনিকেতনে নিয়ে আসতে। এই পর্যন্ত তোমার উত্তর দিয়ে তোমার চিঠি খুঁজে দেখলুম আর কোনো প্রশ্ন নেই। এলমহস আমার সঙ্গে ঘুরতে ঘুরতে বরোদায় এসে জ্বরে পড়েছিল। সেখানে তিন দিন বিছানায় পড়ে ছিল । এখানে এসে সেরে উঠেচে। আর আমার সঙ্গে আছে গোরা’। এবারে সাধুচরণের সঙ্গ ও সেবা থেকে বঞ্চিত আছি। বনমালী নামধারী উৎকলবাসী সেবক বৌমার আদেশক্রমে এসেচে। সে সৰ্ব্বদাই ভয়ে ভয়ে আছে– সব চেয়ে ভয় আমাকে, অথচ আমি বিশেষ ভয়ঙ্কর নই। দ্বিতীয় ভয় পাছে রাজবাড়ির অন্নপানে বিদেশে গঙ্গাতীর হতে দূরবর্তী দেশে তার অকালমৃত্যু ঘটে। তৃতীয় ভয় রেলগাড়িতে বিদেশীর জনতাকে। তারা ওর সঙ্গে হিন্দী বলে, ও বলে বাংলা,— তাতে কথোপকথন উভয়পক্ষেই দুৰ্ব্বোধ হয়ে ওঠে। ওর বিশ্বাস এজন্যে বিদেশীরাই দায়িক । ওর আর একটা বিশেষ গুণ এই যে, ওকে যদি কোনো কাপড় বের করে দিতে বলি, তাহলে সিন্ধুক থেকে একে একে সব কাপড় বের করে তবে সেটা নিৰ্ব্বাচন করতে পারে। আবার সবগুলো তাকে একে একে ফিরে গোছাতে হয়। মানুষের আয়ু যখন অল্প, সময় যখন সীমাবদ্ধ তখন এরকম চাকর নিয়ে মৰ্ত্ত্যলোকে অসুবিধায় পড়তে হয়। ওর একটা মস্ত গুণ এই যে, ও ঠাট্টা করলে বুঝতে পারে, ঠিক সময়ে হাসতে জানে, আমার late lamentcd of সে বালাই ছিল না। আমার আবার স্বভাব এমন যে, ঠাট্টা না করে বাচিনে। তাই, ও যতক্ষণ কাপড় বের করচে আর গোচাচ্ছে আমি ততক্ষণ সেই সুদীর্ঘ সময় ঠাট্টা করে অতিবাহন করি। যাই হোক ওকে বিদেশী হাওয়া বিদেশী খাওয়া, বিদেশী ভিড় থেকে ফিরে নিয়ে গিয়ে কোনোমতে বৌমার হাতে আন্তটি ফিরে দিতে পারলে নিরুদ্বিপ্ন হই। আমার যে কত বড় ३२br