পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩১ ১৬ মাঘ ১৩৩০ শান্তিনিকেতন রাণু, বুধবারে তোমাদের ওখান থেকে চলে এসেচি” আর আজ বুধবার। এই সাতদিন পরে তোমার চিঠি পেয়েচি– মনে করেছিলুম রাণু বৈরাগ্যসাধন করচে, কঠিন তপস্যা। একবার ভেবেছিলুম তোমার তপস্যাভঙ্গ করব। তারপরে ভাবলুম, না, যে মানুষ মুক্তি চাচ্চে তাকে বাধনের দিকে একটুও টানব না। এমন সময় আজ এই বিকেলের ডাকে তোমার চিঠি পেয়ে বুঝতে পারলুম তোমার চিঠিখানা পথহারা হয়ে আমার সন্ধানে আলিপুর ঘুরে শান্তিনিকেতন পেছিল। তুমি ভেবেছিলে আমি কলকাতায়। খুব বেশি ভুল করনি। তাহলে ব্যাপারটা খুলে বলি। কাশি থেকে প্রথম আসা গেল মোগল সরাইয়ে। বেীমা স্টেশনে যেখানে যত রং-করা পুতুল দেখলেন পুপের জন্যে কিনতে বললেন। সঙ্গে কেবলমাত্র ৮২৫ টাকা ছিল। আমি ভাবলুম, পথে আমাদের জলযোগের মত টাকাও বাকি থাকবেনা। পুতুলের দোকান সব যখন খালি হয়ে গেল তখন বৌমার চোখ পড়ল পেয়ারার কাকার পরে। বঙ্গেন কাশির পেয়ারা যদি শান্তিনিকেতনে না নিয়ে যাই তাহলে কাশিতে আসাই নিষ্ফল হল। এক বঁকা শেষ হল। আরেক কাকাও শেষ হল। ইতিমধ্যে গাড়ি ছেড়ে দিলে বলে তৃতীয় কাকাটা বাকি রয়ে গেল। দ্বিতীয় শ্রেণীর তিনটে সিটের মধ্যে একটা সীট পেয়ারায় ভরে গেল। দীর্ঘকাল স্থায়ী হবে আশা করে একটু কাচা গোছের পেয়ারা কেনা হয়েছিল, অথচ তাতে পাকা রংটি ধরেচে। আমি তাকিয়ে তাকিয়ে মনে ভাবলুম এ ত দেখি আমার রাণুরই মত— তার মধ্যে কোথাও বা কাচা, কোথাও বা শ্যামল, কোথাও ২৩৫