পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বা গেীর, কোথাও বা কঠিন, কোথাও ৰা কোমল। এই রকম চিন্তা করতে করতে দানাপুরে এসে উপস্থিত। এমন সময় দেখি এসিষ্টান্ট স্টেশন মাষ্টার মচ্‌মচ্‌ করতে করতে আমারই গাড়ির সামনে হাজির। ভাবলুম পেয়ারা ওজন করিয়ে মাশুল আদায় করবার প্রস্তাব করতে এসেচে। ইচ্ছা করল, কালিদাসের মুখের কাছে হাত নেড়ে নেড়ে কেদারা রাগিণীতে গান ধরি “সখি আমারি দুয়ারে কেন আসিল ?” এমন সময়ে সে জিজ্ঞাসা করলে, “Are you Sir R. N. Tagore? সত্যের খাতিরে আমাকে কথাটা স্বীকার করতে হল। সে বল্লে, এ গাড়ীতে নিশ্চয়ই অসুবিধা হচ্চে, আমি তোমার খবর পেয়েই একটা ফাষ্ট ক্লাস গাড়ি নতুন জুড়ে দিয়েচি, পাটনা জংসন স্টেশনে সেই গাড়ি দখল কোরো। পাছে ভদ্রলোক মনে মনে দুঃখিত হয় সেই জন্যে পাটনা জংসনে ফাষ্টক্লাসে রওয়ানা হলুম। পেয়ারাগুলোকে নানা ট্রাঙ্কের কোণে সন্নিবেশিত করা গেল। আমাদের লীলমণি হাতে কাঠের পুতুল নিয়ে হাঁপাতে হাপাতে এসে উপস্থিত। বললে, “এটা ফেলে আসা হচ্চিল আমি এনেচি।” আমি বল্লম “অনেক লোকসান বাঁচিয়েচ, কিন্তু হে লীলমণি, এর চেয়ে দামী জিনিষ ছিল সেগুলোর কি গতি হল ?” সে বললে, “কুলীরা সব নিয়ে আসচে।” আমি, এমন কি বৌমাও, লীলমণির এই আশ্চৰ্য্য বিবেচনা শক্তি ও সতর্কতা দেখে বিস্ময়াবিষ্ট হলুম। কিছুক্ষণ পুঁটুলি বাক্স টিফিন ক্যারিয়র জলের কুঁজে ইত্যাদি উপকরণ বাহক কুলীদের পথপ্রদর্শক হয়ে এসে বললে, “আমি একলা এই প্রভূত অস্থাবর সম্পত্তির গুরুভার দায়িত্ব বহন করে হয়রাণ হয়ে পড়েচি– আমাদের লীলমণিকে কোথাও দেখা গেল না।” আমি তাকে অনেক আশ্বাস দিয়ে বললুম “তার জন্যে কিছুই উৎকণ্ঠিত হোয়ো না। সে পৌত্তলিক একখানি কাঠের পুতুলের তদারকে তার দেহমনপ্রাণ একান্ত উৎসর্গ করেছিল। সম্প্রতি সেই ভারমুক্ত হয়ে ভূতাবাসের কাষ্ঠাসনে বিশ্রামের আনন্দ উপভোগ করচে।" লীলমণির షార్సిల