পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কখনো অনর্থক ক্লিষ্ট কোরো না। আমার শরীরের অবস্থা সম্বন্ধে কিছু উদ্বিগ্ন হয়ে আমি কলকাতায় এসেছিলুম। মনে হয়েছিল যেন কিছু কল বিগড়েচে। আমি মেরামত-করা শরীর নিয়ে ব্যবহার করতে নিতান্তই নারাজ। এখানে এসে নীলরতন সরকারকে দিয়ে দুদিন ধরে দেহটাকে উল্টিয়ে পাল্টিয়ে পরীক্ষা করিয়ে নিলুম। তিনি বল্লেন, কল কোথাও কিছুই বিগড়োয় নি; বল্লেন আমার নাড়ী যৌবনের নাড়ী। তবে আমি যে কথায় কথায় কেবলি ক্লান্ত হয়ে হাপিয়ে পড়ি তার কারণ আমার দেহের শক্তি, বিশেষভাবে হৃৎপিণ্ডের শক্তি, অতিরিক্ত খরচ করে দেহটাকে দেউলে করে আনচি— দেহযাত্রার পূর্ণ প্রয়োজনের জন্যে সৰ্ব্বদা যে পুঁজি হাতে রাখা উচিত অসাবধান হয়ে আমি সেটাকে উড়িয়ে দেবার চেষ্টায় আছি। কিছুকাল সম্পূর্ণ বিশ্রাম করে আবার কিছু মূলধন সঞ্চয় করা বিশেষ আবশ্যক। যাই হোক একটা আশ্বাসের কথা এই যে, আমার দেহ মোটরগাড়ির পেট্রল অনেকখানি ফুরিয়ে এসেচে কিন্তু কল কোথাও ভাঙে নি, স্কু কোথাও ঢিলে হয় নি। অতএব এখনো যতদিন দম সম্পূর্ণ ফুরিয়ে না যায় বসস্তের জয়গান করতে পারব | কিন্তু তুমি এখন মনকে সুস্থির করে পড়াশুনায় লেগে যাও। পরীক্ষা ফলের প্রতি উদাসীন হেয়ে না। আমি চীন থেকে ফিরে এসে তোমাকে প্রসন্ন প্রফুল্ল সুস্থ সবল দেখি যেন। ইতি ৪ ফেব্রুয়ারি ১৯২৪ তোমার ভানুদাদা ૨8૦