পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৭ ৭ মার্চ ১৯২৪ [কলকাতা] রাণু কলকাতার ঠিকানায় লিখেচ বলে তোমার চিঠিখানি আজ এইমাত্র পেলুম। তোমাকে যে বেদনা দিয়েছিলুম তারি কান্নার চিঠি এতদিন পেয়ে আসচি। তুমি জাননা এতে আমাকে কত ব্যথিত করে তুলেছিল। আমার পরের চিঠি পেয়ে তোমার হৃদয়ের ক্ষতযন্ত্রণা অনেকটা দূর হয়েচে এইটি জানবার জন্যে আমার মন অপেক্ষা করেছিল। সমুদ্রের উপর দিয়ে যখন ঝড় বইতে থাকে তখন তার সমস্ত অশ্রুরাশি তরঙ্গিত হয়ে ওঠে— ঝড় থেমে যাওয়ার পরেও অনেকক্ষণ থাকে ঢেউয়ের ভিতরকার সেই কান্না, তোমার এই চিঠির ভিতরেও তোমার ব্যথার সেই ঢেউ এখনো যেন ফুলে ফুলে উঠচে। যাক সে ঝঞ্জা কেটে গেছে— এখন তোমার মনের উপর একটি প্রশান্ত প্রসন্নতা মেঘমুক্ত প্রভাত আলোর উপর বিকীর্ণ হোক। এতে তোমার ভালোই হবে রাণু— দুঃখের এই মস্থনের ভিতর দিয়ে নিজের অস্তরের গভীরতাকে তুমি উপলব্ধি করেচ– এ আর তুমি কখনো ভুলতে পারবে না। কুমারসম্ভবের গল্প ত জান। জীবনকে হাল্কা করে জীবনের চরম সাধনার জিনিষকে পাওয়া যায় না। গভীর দুঃখের তপস্যায় নিজের পরম পরিপূর্ণতাকে স্পর্শ করা যায়। এই দুঃখের আঘাত তোমাকে চিরদিনের মত উদ্বোধিত করুক, জীবনের উপরিতলের চঞ্চল ফেনিলতার ভিতর দিকে নিজের মধ্যেকার যা শ্রেষ্ঠ তাকেই লাভ কর। অনেকদিন আমি এই ভেবেচি, আমি ইচ্ছে করেচি, আমি তোমাকে আর কিছু দেবার অবকাশ যদি না পাই তবে যেন তোমার গভীরতম আপনাকে দেখিয়ে দিয়ে যেতে পারি। চীনে যাবার দিন কয়েক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল। ২৬শে মার্চ আমাদের S@ 8