পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বসলুম। তোমার সঙ্গে কথা ছিল যে তোমার চিঠি পেলে তবে তার উত্তর দেব, আজ তার ব্যতিক্রম করা হল তার কারণ বলি। কথা ছিল আমাদের জাহাজ ২৭শে মার্চে ছাড়বে— তার পরে হঠাৎ শোনা গেল ২১শে মার্চে। অর্থাৎ আর প্রায় সপ্তাহখানেকের মধ্যে। এই কয়দিন আমার সময় খুব অল্পই থাকবে। আমাকে চেষ্টা করতে হবে চীনের জন্যে একটা লেকচার লিখতে। তা ছাড়া বিদায়ের পূৰ্ব্বে এই কয়দিন নানা রকম কাজের আর নানা রকমের লোকের ভিড় থাকবে। সুলীর এসেছে, তার কাছে শুনলুম যে, তোমাদের পরীক্ষা আগামী ৩১শে তারিখে। নিশ্চয়ই এতদিন নানা গোলেমালে তোমার পড়াশোনার পক্ষে অস্তরে বাহিরে নানা রকম ক্ষতি হয়েচে । এই কয় সপ্তাহ বিনা বিঘ্নে, মনকে শাস্ত রেখে পরীক্ষার জন্যে ভালরকম করে প্রস্তুত হতে পার এই হলেই ভাল হয়। আমাকে চিঠি লেখবার জন্যে তুমি কিছুমাত্র ব্যস্ত হোয়ো না। যদি এর মধ্যে অল্প কিছু অবকাশ পাও এবং সহজেই লিখতে পার তা হলে ছোট্ট চিঠিতে তোমার যা কিছু মনের কথা বা গল্প বলবার আছে বলতে পার। চিঠির আয়তন বড় হলেই যে বড় চিঠি তাকে বলে তা নয়। যে চিঠি সহজ স্বাভাবিক, যার ভিতর দিয়ে লেখকের কন্ঠস্বর শুনতে পাওয়া যায়, যার ভিতরে মুখ চোখের ইঙ্গিত পর্যন্ত যেন প্রকাশ পায় সেই চিঠিই চিঠি । আসল কথা যখন দূরের লোক চিঠির ভিতর দিয়ে সামনের লোক হয়ে দাড়ায় তখনি চিঠির কাজ হয়। কিন্তু যখন কেবল কথা শোনা যায় গলা শোনা যায় না, হাতের অক্ষরে দেখা যায় মুখের ভাব দেখা যায় না, তখন সে চিঠি মরা চিঠি । তোমার চিঠিতে তুমি ঠিক প্রকাশ পাও— তার কথা তোমাকে একটুও ছাপিয়ে ওঠে না। আমার চিঠি অনেক সময়েই কেবল রচনামাত্র। তার কারণ হচ্চে এই, আমি অনেক সময়েই কিছু না কিছু বিষয় নিয়ে চিস্তা করি। এই যে এতকাল ধরে লিখে এসেছি সব লেখাতেই কিছু না কিছু বিষয় আলোচনা করেচি। এই জন্যে কলম হাতে লিখতে বসলেই ২৫৭ ●bアW > *