পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভ্যাসক্রমে মানুষের চেয়ে বিষয়টাই বড় হয়ে ওঠে— তাতে করে চিঠিটা মারা যায়। সাধারণত মেয়েরা পুরুষদের [চেয়ে] ভাল চিঠি লেখে, তার কারণ, মেয়েরা আপনাকে প্রকাশ করে, পুরুষরা চিস্তাকে প্রকাশ করে। তুমি যখন যা তা নিয়ে গল্প করে যাও শুনতে বেশ ভাল লাগে, কেননা, সেই কথার ধারা তোমার প্রাণের ধারা। তোমার চিঠিও সেই রকম। তাই বলছিলুম, তুমি যতটুকু সহজেই লিখতে পার, তাই লিখো ; যখন আমার সঙ্গে অল্প একটু সময়ের জন্যে কথা কয়ে নিতে ইচ্ছে হবে তখন লিখো। পড়াশুনো ফেলে তাড়াতাড়ি করে লিখতে যেয়ে না, আর বেশি লিখতে হবে তাও মনে কোরো না। কাল সন্ধের সময় মঞ্জুর বিয়ে হয়ে গেল।’ আজ সকালে কাদতে কাদতে চলে গেল। বিয়ের কিছুদিন আগে থাকতেই ওর কান্না সুরু হয়েচে। ওর কান্না দেখে বুঝতে পারি মেয়েদের পক্ষে প্রথম শ্বশুর বাড়ি যাওয়া বলতে কতখানি বোঝায়। স্বামীর উপর কতখানি ভালোবাসা থাকলে এই বন্ধন ছেদনটা সহজ হয় তা ঠিক বুঝতে পারা পুরুষদের পক্ষে শক্ত। মঞ্জুর এই কান্নাটা নিশ্চয়ই ক্ষিতীশের মনকে খুব বেদনা দিচ্চে, তবে মনে হয়ত সংশয় হচ্চে মঞ্জু তাকে যথেষ্ট ভালোবাসে কি না। এই সংশয়ের উপর এই অনিশ্চয়ের উপরই মানুষের বড় বড় ট্রাজেডির পত্তন। আমরা জেনেশুনে যে সব দুঃখের সৃষ্টি করি তার জন্যে প্রস্তুত থাকতে পারি। কিন্তু কেই বা ঠিক করে অন্যের মন বুঝতে পারে, আর নিজের মনই বা নিশ্চিত বোঝে ক’জন। এই রকম আলো আঁধারে নিজের অগোচরেই যতরকম উৎপাতের সৃষ্টি হয়। আমি অনেকবার ভেবেচি মঞ্জ ক্ষিতীশকে ঠিক কতখানি ভালোবাসে? এ ত ভালোবাসার মরীচিকা নয় ? মঞ্জুই কি তা ঠিক বলতে পারে? উপস্থিতমত সে কি একটা মনে করে নিয়েছিল, তার পরে তার সত্যের পরীক্ষা ধীরে ধীরে হতে থাকবে। কিন্তু মোটের উপর এ কথা বলা যায় যে, দুজন মানুষের মধ্যে যদি অত্যন্ত SQbr