পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

করে ওঠে। আমি এই বৈশাখ মাসের শেষ দিকে জাহাজে চড়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পাড়ি দেব বলে আয়োজন করচি। যদি কোনো বাধা না ঘটে তাহলে বেরিয়ে পড়ব। পশ্চিম দিকের সমুদ্র পথ আজকাল সকল সময়ে পারের দিকে পৌছিয়ে দেয় না তলার দিকেই টানে — পূৰ্ব্ব দিকের সমুদ্র পথ এখনো খোলা আছে– কোনদিন হয়ত দেখব সেখানেও যুদ্ধের ঝড় এসে পৌচেছে। যাই হোক তোমার কাশীর নিমন্ত্রণ যে ভুলেচি তা মনে কোরো না; তুমি আয়োজন ঠিক করে রেখো, আমি কেবল একবার পথের মধ্যে অষ্ট্রেলিয়া জাপান আমেরিকা প্রভৃতি দুটো চারটে জায়গায় নিমন্ত্রণ চট্ট করে সেরে নিয়ে তারপরে তোমার ওখানে গিয়ে বেশ আরাম করে বসব— আমার জন্যে কিন্তু ছাতু কিম্বা রুটি, অড়রের ডাল এবং চাটুনির বন্দোবস্ত করলে চলবে না, তোমাদের মহারাজ নিশ্চয়ই খুব ভাল রাধে কিন্তু তুমি নিজে স্বহস্তে শুকৃতনি থেকে আরম্ভ করে পায়স পর্যন্ত যদি রেধে না খাওয়াও তাহলে সেই মুহূৰ্ত্তেই আমি— কি করব এখনো তা ঠিক করিনি— ভাবছিলুম না খেয়েই সেই মুহুৰ্ত্তেই আবার অষ্ট্রেলিয়ায় চলে যাব— কিন্তু প্রতিজ্ঞা রাখতে পারব কিনা একটু একটু সন্দেহ আছে সেই জন্যে এখন কিছু বলুম না। কিন্তু রান্না অভ্যাস হয় নি বুঝি ? তাই বল! কেবলি পড়া মুখস্থ করেচ ? আচ্ছা অন্তত এক বছর সময় দিলুম— এর মধ্যেই মার কাছে শিখে নিয়ো । তাহলে সেই কথা রইল। আপাতত আমাকে কলকাতায় যেতে হবে। বাক্সগুলো গুছিয়ে ফেলা চাই। আমি খুব ভাল গোছাতে পারি। কেবল আমার একটু যৎসামান্য দোষ আছে— প্রধান প্রধান দরকারী জিনিসগুলো প্যাক করতে প্রায়ই ভুলে যাই— যখন তাদের দরকার হয় ঠিক সেই সময়ে দেখি তাদের আনা হয় নি। এতে বিষম অসুবিধা হয় বটে কিন্তু গোছাবার ভারি সুবিধে হয়— কেন না বাক্সর মধ্যে যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যায়— আর বোঝা কম হওয়াতে রেলভাড়া জাহাজভাড়া অনেক কম লাগে। দরকারী জিনিস না নিয়ে অদরকারী জিনিস ૨૦