পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রস্তুত। কাপ্তেন বলে গেল, আমার যখন যা দরকার তাকে জানালেই সমভ বন্দোবস্ত করে দেবে। সকালে চায়ের সঙ্গে অন্য যাত্রীরা যখন বরাদ্দমত কমলালেবু পায় আমি তখন আনারস দাবী করলে আনারস এসে হাজির। নিয়ম হচ্চে সাড়ে আটটার মধ্যে স্নান সারতে হবে— সকলে তাড়াতাড়ি করে স্নান করে নেয়। আমি খবর পাঠিয়ে দিলুম সাড়ে এগারোটার সময় নাইব। তাই সই। একজন লোক অন্য কাজ ফেলে সেই সাড়ে এগারোটার সময় স্নানের ব্যবস্থা করবার জন্যে উপস্থিত থাকে। যেমনি খবর পেলে যে আমার ডেক চেয়ারের দুই হাতার উপর একটা কাঠের তক্তা পাতা থাকলে আমার লেখবার সুবিধে হয় আমনি জাহাজের ছুতোর মিস্ত্রিকে ডেকে তখনি একটা কাঠের তক্তা তৈরি করিয়ে দিলে। খ্যাতির উৎপাত অনেক আছে সত্য কিন্তু খ্যাতির কিছু কিছু সুবিধাও আছে এ কথা স্বীকার করতেই হবে। রেঙ্গুন পিনাং সিঙ্গাপুর যেখানে গিয়েচি সেখানেই ভিড়ের মধ্যে হাবুডুবু খেতে হয়েচে বটে কিন্তু তেমনি আবার দেখাশোনা আহার আমোদ অযাচিত অবধারিতভাবে পাওয়া গেছে। অল্প সময়ের মধ্যে অল্প খরচে তা পাবার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না। নতুন জায়গায় নিজেল পরিচয় দিতে অন্য লোকের অনেক সময় লাগে, আমি আগেভাগেই সে কাজটা সেরে রেখেছি। তাই যেখানে যাই, দেখি, পাত পাড়াই আছে। তোমাকে চিঠি লিখতে লিখতে ঘুম পেয়ে এসেছিল সে আমার হাতের লেখার টলমলে ভাব দেখলেই বুঝতে পারবে। হয় ত এমনি ঢুলতে ঢুলতেই লেখা শেষ পর্যন্ত চলত। এমন সময় অপরাহুের রৌদ্র এসে আমাকে তাড়া লাগালে। পশ্চিমের ডেক থেকে পরের ডেকে আমার চৌকিটা টেনে আনতে হল। এ চৌকিটা তোমার খুব চেনা, পরিচয় দিলেই মনে পড়বে। জোড়াসাঁকোর বাড়ির দোতলার ঘরে সেই যে ঘাসের বুননি-করা মত্ত একটা চৌকি ছিল— মাঝে মাঝে আমার সান্নিধ্য লাভ করবার জন্যে যার হাতলের উপরে এসে তুমি বসতে, সেই বিরাট কেদারাটা আমার &brの