পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪ জুলাই ১৯১৮ শাস্তিনিকেতন রাণু মনে করেছিলুম কাল তোমার চিঠি পাব। কালই পাওয়া উচিত ছিল। পোষ্ট্র আপিসে কালই নিশ্চয় এসেছিল, কিন্তু পোষ্টমাষ্টারের অসুখ করেচে বলে পশ্চিমের ডাক কাল আমাদের দেয় নি আজ সকালে দিয়ে গেছে। তোমাদের পথের খবর জানবার জন্যে আমার মন উদ্বিগ্ন হয়ে ছিল। আজ সকালে তোমার চিঠি’ পেয়েই বুঝেছিলুম কার চিঠি। তখন কি করছিলুম সেই কথাটা আগে বলি। কাল রাত্তির যখন আড়াইট তখন বৃষ্টি আরম্ভ হয়েচে— তার পরে বরাবর বৃষ্টি চলচেই— চারদিকের মাঠে জল বয়ে যাচ্চে, আকাশ জলে ঝাপসা, মেঘের কোথাও বিচ্ছেদ নেই। এমন ঘোর বাদলায় ক্লাস হওয়া অসম্ভব, তাই এই সুযোগে এণ্ডুক্ত সাহেব তার খাতা যাচ্চি সে লিখে নিচ্চে। আমি যে-কোণে বসে লিখে থাকি সে-কোণ পূব দিকের জানলার কাছে বসে বকে যাচ্চি আর এভুজ একটা তাকিসার উপরে চড়ে বসে লিখচে এমন সময় ডাকের চিঠি এল। কাল তোমারচিঠি না পেয়ে ভাবছিলুম আজ সকালে চিঠি পাবনা, দুপুরের ডাকে পাব-২ তাই চিঠিগুলো না দেখেই পাশে ফেলে রেখে কাজ করতে লাগলুম,— কিন্তু একটু বাদেই মনটা উতলা হল— একবার লেফাফার উপর চোখ বুলিয়ে দেখতেই তোমার হাতের অক্ষর চোখে ঠেক্‌ল। এভুজকে বহুম, "একটু রোস, আমার চিঠি পড়ে নিই।” তোমার চিঠিখানি পড়লুম। রেলের পথে তোমার মন যে খারাপ হয়ে ছিল সেই পড়ে আমার বড় কষ্ট হল। ২৩