পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ফিরে যেতে চাচ্চে। তার জীবনের মধ্যাঙ্কুে [য] সে কাজও অনেক করেছে ভুলও কম করেনি— আজ তার কাজ করবার শক্তি নেই, ভুল করবার সাহস নেই,— আজ জীবনের সন্ধ্যাবেলায় সে আর একবার বিশ্বপ্রকৃতির আঙিনায় দাড়িয়ে আকাশের তারার সঙ্গে সুর মিলিয়ে শেষ বাঁশি বাজিয়ে যেতে চায়। যে রহস্যলোক থেকে এই মৰ্ত্ত্যলোকে একদিন সে এসেছিল সেখানে ফিরে যাবার আগে শাস্তিসরোবরে ডুব দিয়ে স্নান করতে চায়। তেমন করে ডুব দিতে যদি পারে তাহলে তার জীর্ণতা তার মানতা সমস্ত ঘুচে যাবে। আবার তার মধ্যে থেকে সেই চিরশিশু বাহির হয়ে আসবে। সংসারের জটিলতায় ঘিরে ঘিরে আমাদের চিত্তের উপর যে জীর্ণতার আবরণ সৃষ্টি করে— সেটা ত ধ্রুব সত্য নয়, সেটা মায়া, সেটা যে-মুহুৰ্ত্তে কুহেলিকার মত মিলিয়ে যায় আমনি নবীন নিৰ্ম্মল প্রাণ আপনাকে ফিরে পায়। এমনি করে বারে বারে আমরা নূতন জীবনে নূতন শিশুর রূপ ধরি। সেই নূতন জীবনের সরল বাল্যমাধুৰ্য্যের জন্যে আমার সমস্ত মন আগ্রহে উৎকণ্ঠিত হয়ে উঠেচে। আজ আমি চলেচি সমুদ্র পারে কাজের ক্ষেত্রে— যখন সেই কাজের ভিড়ে থাকব তখন হয়ত আমার ভিতরকার কৰ্ম্মী আর সকল কথা ভুলিয়ে দেবে। কিন্তু তবু সেই সুদূর গানের ঝরনা তলার বাঁশির বেদনা ভিতরে ভিতরে আমাকে নিয়তই ডাকবে।— ডাকবে সেই নির্জন নিৰ্ম্মল নিভৃত ঝরনা তলার দিকেই। সেই ডাক আমার সমন্ড ক্লাস্তি ও অবসাদের ভিতর দিয়ে আমার বুকের মধ্যে আজ এসে কুহরিত হচ্চে — বলচে সেখানে ফিরে যাবার পথ এখনো সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয় নি ; এখনো আমার সুরের পাথেয় সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায় নি— এখনো সেই নব নব বিস্ময়ে দিশাহারা বালককে কোনো এক ভিতর মহলে খুঁজে পাওয়া যায়। তাই, যদিও আজ চলেচি পশ্চিম সমুদ্রের তীরে আমার মন খুঁজে বেড়াচ্চে আরেক তীরে সেই সকল-কাজ-ভোলা বালকটিকে। পূরবী গানে সে আপন লীলা শেষ করতে না পারলে সন্ধ্যা ব্যর্থ হবে— এখন ३ॐ७