পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তুমি মনে কোরো না আমি বুঝতে পারি নি। সেই বুধবারের দিন" যখন তোমার গাড়ি চলছিল, আর আমি যখন চুপটি করে আমার কোণে, এবং সন্ধ্যাবেলায় আমার ছাদে বসে ছিলুম তখন তোমার কষ্ট আমাকে বাজছিল। আমি মনে মনে কেবল এই কামনা করছিলুম, যে বাদলের উপরে সূর্যের আলো পড়ে যেমন ইন্দ্ৰধনু তৈরি হয়, তেমনি করে তোমার অশ্রুভরা কোমল হৃদয়ের উপরে স্বগের পবিত্র আলো পড়ুক, সৌন্দর্যের ছটায় তোমার জীবনের এক দিগন্ত থেকে অন্য দিগন্ত পূর্ণ হয়ে উঠুক। যার আশীৰ্ব্বাদে আমাদের জীবনের সমস্ত সুখ ফুলের মত বিকশিত হয় এবং সমস্ত দুঃখ ফলের মত কল্যাণপূর্ণ হয়ে ওঠে, তারই আশীৰ্ব্বাদ তোমার জীবনের সকল সুখ দুঃখকেই সৌন্দর্য্যে এবং মঙ্গলে সার্থক করে তুলুক্‌। আমি আমার জীবনকে তারই কাজে উৎসর্গ করেছি— সেই উৎসর্গকে তিনি যে গ্রহণ করেচেন তাই মাঝে মাঝে তিনি আমাকে নানা ইসারায় জানিয়ে দেন– হঠাৎ তুমি তারই দূত হয়ে আমার কাছে এসেচ, তোমার উপরে আমার গভীর স্নেহ তার সেই ইসারা । এই আমার পুরস্কার। এতে আমার কাজে দ্বিগুণ উৎসাহ হয়, আমার ক্লাস্তি দূর হয়ে যায়, আমার মনের আকাশ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। ভগবান তার সেবককে খুসি হয়ে মাঝে মাঝে দেবতার অমৃত পান করিয়ে দেন— তাতে আমাদের শক্তি বেড়ে যায়, অবসাদ দূর হয়। সেই অমৃত তিনি তোমাকে দান করুন— তুমি নুতন শক্তিতে জীবনকে সার্থকতার পথে নিয়ে যাও— তোমার চারিদিককে আনন্দময় কর । এভুজকে বল্লম, আজ আর লেখা চলবে না। তাকে বিদায় করে দিয়ে আমার সেই কোণটিতে ফিরে এসে তোমাকে চিঠি লিখতে বসেছিলুম। ইতিমধ্যে বৃষ্টি ধরে গেল। তখন মনে পড়ল, কাল এক দল গুজরাটি অতিথি আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েচেন। সঙ্গে তাদের মেয়েরা আছেন, ছোট ছোট ছেলেও অনেকগুলি। তার মধ্যে চারটি ছেলেকে তারা এখানে ૨8