পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মত। আমি ঘর বন্ধ করে এই তাপ এড়াতে চাই নে। আমি চেয়ে থাকি— আকাশে চীল উড়ে যায় ; শালিখগুলো বারান্দায় এসে ঠোট দুটাে খুলে আমি তাদের জন্যে একটা হাড়িতে জল ভরে জলসত্র খুলেচি। বেলা যখন চারটে বাজে— সূর্য পশ্চিম দিগন্তে হেলে পড়ে আমার একতলা ঘরটার মধ্যে তার দীর্ঘ করপ্রসারণ করে। তখন পূবদিকের বারান্দায় গিয়ে বসি, যথাসময়ে চা আসে। চা খাওয়া হলে পরে পূবদিকের কাকর বেছানো কাছে কবিতা পড়বার জন্যে। এখন বিদ্যালয়ের ছুটি— ছাত্রছাত্রীরা প্রায় কেউ নেই। মেয়েদের মধ্যে আসে লাবী অমিতা গৌরী", আর তাদের মায়েরা"; ছেলে কেবল দু জন। আমার সেই বৈকালিক ক্লাস কেবল দুদিন আরম্ভ হয়েচে। wordsworth" থেকে পড়াতে সুরু করেছি, প্রথম দিন পড়িয়েছিলুম সেই হাইল্যাণ্ড মেয়েটির কবিতা”— কাল পড়িয়েছি “She was a phantom of delight I" of on o osoft Co., 33i Colo হয় কখনো ভুলতে পারবেনা। আমি যদি কবিতা ইত্যাদি বাজে জিনিষ লিখে সময় নষ্ট না করতুম তাহলে নিশ্চয়ই ইস্কুলমাস্টার হতে পারতুম। পড়ার ক্লাস হয়ে গেলে পর ক্রমে যখন সন্ধ্যা অন্ধকার নেমে আসে তখন আবার একদল আমার কাছে গান শিখতে আসে। এখন দিনু নেই– সে গেছে পুরীতে চলে, কাজেই গান শেখাবারও একমাত্র কৰ্ত্তা আমি। ভুল শেখাই কি ঠিক শেখাই তা অন্তর্যামী জানেন। কিন্তু শিখিয়ে ত যাই। ক্রমে রাত্তির হয়ে আসে— মেয়েরা চলে যায়। সেই বাইরে বসেই রাত্রের খাওয়া খেয়ে নি। তার পরে অনেক রাত্রি পর্যন্ত ঐখানেই পড়ে থাকি। আমার জন্মদিনেই শুক্লপক্ষ শেষ হয়ে গেছে। এখন কৃষ্ণপক্ষের রাত্রির ভূমিকা হয় অন্ধকারে। কি গভীর নিৰ্ম্মল স্বচ্ছ অন্ধকার — অসংখ্য তারার সভায় প্রহরগুলি নিঃশব্দচরণে তাদের প্রণাম জানিয়ে জানিয়ে চলে যায়। আমি ●●●