পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনেক দিন পরে মোগলসরাইয়ে আশা ও রাণুর সঙ্গে দেখা হয়ে খুব খুসি হলুম। রাণুর অনুরোধ, তার বিবাহের পূৰ্ব্বে যেন যুরোপে না যাই। তার অনুরোধ এড়ানো কঠিন। কিন্তু বিবাহের দিন পরিবর্তন কি অসম্ভব ? শুনেছি পাত্রের ইচ্ছা ছিল নভেম্বরে বিবাহ হয়। যদি তদনুসারে দিন স্থির কর তাহলে আমি তার পূৰ্ব্বেই ফিরে আসতে পারি। আমার যুরোপে যাবার তাড়া কিসের একটু খোলসা করে বলি। আমার শরীর ভেঙে গেছে— ডাক্তারের মতে আমার প্রাণশক্তির ভাণ্ডার দেউলে। দেহের যন্ত্র ঠিক আছে কিন্তু তার কাজ চালাবার সম্বল ফুরিয়ে গেছে। অনেকদিন জড়ের মত পড়ে থেকে সেই শক্তি আবার সঞ্চয় করে নিতে তারা পরামর্শ দেয়। যাই হোক এটা বুঝতে পরিচি যে, আমার যা কাজ বাকি খুব শীঘ্র তা সেরে নিতে হবে – ভারতবর্ষে ৫০ বৎসরের উদ্ধকাল অকৃপণভাবে কৰ্ম্মসাধনা করে এসেচি। তার মধ্যে যদি কিছু সত্য থাকে তাহলে একদিন দেশ তা গ্রহণ করবে। অতএব রইল তা কালের হাতে, আমার তার জন্যে তাড়া নেই। তাড়া অসমাপ্ত কাজের জন্যেই, কেননা সময় সঙ্কীর্ণ। তোমরা হয়ত ঠিকমত বুঝতে পারবে না, কিন্তু নিশ্চয় জেনো, য়ুরোপে আমার কাজ আছে। আমার মেয়াদ ফুরোবার আগেই সে কাজ আমাকে সেরে যেতে হবে। তাই ঠিক করেছিলুম দুই মাস বিশ্রাম করে নিয়ে মে মাসের আরস্তে সেখানে গিয়ে শীতের পূৰ্ব্বে ফিরে আসব— আগামী বৎসরের গ্রীষ্মে ফের গিয়ে ছয় মাস কাটিয়ে আসব। জাহাজের কামরা রিজার্ভ করাই আছে। রাণুর বিবাহ যদি আমার যাত্রার আগে বা ফিরে আসার পরে হয় তাহলে সব সহজ হয়। কিম্বা যদি রাণু মত করে তাহলে রাণু ও বীরেনকে একত্র দেখে বিবাহের পূৰ্ব্বেই ওদের আশীৰ্ব্বাদ করে বিদায় নিতে পারি। রাপু আমাকে সত্য করিয়ে নিয়েচে ওর বিবাহকালে আমাকে উপস্থিত থাকতে হবে। যদি সত্য বা ত্রেতা যুগে জন্মাতুম তাহলে এবারকার পাঁজিতে 6ఆచి