পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অনাবশ্যক। বিশেষত আমার উপর নানা উপদ্রব চলচেই, শরীরের বর্তমান অবস্থায় সেটা বিশেষ পীড়াজনক। যতদিন এ দেশে থাকব আমাকে নিস্কৃতি দেবে না। ১লা মে তারিখে জাহাজে ক্যাবিন ঠিক ছিল, সেটা ছেড়ে দিয়েছি— এই গরমের দিনে জাহাজে স্থান পাওয়া অত্যন্ত কঠিন— ১৫ই মে-তে যাত্রার চেষ্টা করতে ইচ্ছা করি, কিন্তু হয় ত ক্যাবিন পাব না। তাহলে অন্তত ১লা জুনে ছাড়তে চাই— তার পরে থেকে দীর্ঘকাল মনসুনের উৎপাত, সেই দোলায় সমুদ্রে যেতে আমার ডাক্তার হয়ত অনুমতি দেবেন না। যুরোপে আমার কাজও ঢের আছে— সেইজন্যে এখানে বৃথা বসে বসে শরীরটাতে ক্রমাগত ভাঙন ধরাতে আর ইচ্ছা করচে না। যুরোপের আবহাওয়ায় সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করতে পারব বলে খুবই আশা আছে। কিছুকাল পূৰ্ব্বে বীরেনের বোনের কাছে শুনেছিলুম ২৮শে জুনে রাণুর বিবাহ স্থির হয়ে গেছে। মাঝে মাঝে ওদের অনেকের সঙ্গেই আমার দেখা হয়েছে, রাণুকে ওরা খুব অন্তরের সঙ্গে স্নেহ করে দেখে আমি ভারি নিশ্চিন্ত হয়েছি। বিশেষত রাণুর প্রতি বীরেনের মনের ভাব ও ব্যবহার দেখে অত্যস্ত আনন্দ পেয়েছি। সন্দেহমাত্র নেই যে এর চরিত্রে অসামান্য ঔদার্য্য আছে এবং রাণুকে এর মত এমন বড় করে ভালোবাসতে আর কেউ পারে নি। মধ্যে শত্রুপক্ষ নানা বিঘ্ন ঘটিয়ে যে সব দুঃখ সৃষ্টি করেছিল তাতে শুভ ফলই ফলেছে, তাতে সকল পক্ষেরই যে উপকার করেছে এমন আর কিছুতেই হতে পারত না। সেই জন্য এখন আমি নিজের কাজে প্রবৃত্ত হবার আর কোনো বাধা দেখচিনে। কৰ্ত্তব্যে অনাবশ্যক শৈথিল্য করা আমার উচিত হবে না। তোমরা সকলেই আমার নববর্ষের আশীৰ্ব্বাদ গ্রহণ কোরো। ৪ বৈশাখ ১৩৩২ তোমাদের শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর \GNo98